বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে বিএনপির

আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে বিএনপির 

bnp

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  রমজানের পর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটে। ৫ই জানুয়ারির একতরফা bnpনির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকারকে এক বছরের বেশি সময় দিতে চান না তারা। আপাতত রাজপথের কর্মসূচি না দিলেও চলছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও আন্দোলনের কর্মকৌশল প্রণয়নের কাজ। সূত্র জানায়, আসন্ন রমজানের পর আন্দোলনের ওয়ার্মআপ শুরু করবে বিরোধী জোট। অক্টোবর থেকে শুরু হবে রাজপথের চূড়ান্ত আন্দোলন। বর্তমান সরকারের আমলে একের পর এক ইস্যুতে আন্দোলনে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বিএনপিকে। আর প্রতিটি আন্দোলনেই নির্যাতন-নিপীড়ন ও জেল-জুলুমের শিকার হতে হয়েছে দলের নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে অব্যাহত মামলার কারণে সে ভোগান্তি পৌঁছে অসহনীয় পর্যায়ে। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর আন্দোলনে অনেকটাই ক্লান্তি নেমে আসে নেতাকর্মীদের। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের গা-বাঁচিয়ে চলার নীতির কারণে কর্মীদের মধ্যে নেমে আসে হতাশাও। ২৯শে ডিসেম্বরের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতেই তার প্রথম প্রকাশ ঘটে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের পরপরই হঠাৎ করে আন্দোলন থেকে সরে আসে বিরোধী জোট। নেতাকর্মীদের বিশ্রাম দিতেই চলতি বছরের প্রথম ৬ মাস উল্লেখযোগ্য কোন কর্মসূচিই দেয়নি বিএনপি। নেতারা জানান, দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের বিশ্রাম দিতে হয়। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেকের সংসার আছে। তাই আসন্ন রমজান ও কোরবানি পর্যন্ত বড় ধরনের কর্মসূচির দিকে না যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের শীর্ষ মহলে। তবে আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে চলছে দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন। ইতিমধ্যে অঙ্গদলগুলোর মধ্যে শ্রমিক দল পুনর্গঠন সম্পন্ন হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, যুবদলের পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণা আসবে। কৃষক দল, মহিলা দলসহ কয়েকটি অঙ্গদলের পুনর্গঠন করা হবে পর্যায়ক্রমে। আগামী ঈদুল আজহার আগেই এসব পুনর্গঠন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তবে চলতি বছরে দলের কাউন্সিল আয়োজনের কোন পরিকল্পনা নেই বিএনপির। পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজন সাপেক্ষে একটি নির্বাহী কমিটির সভা ডাকা হতে পারে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের জনগণ ও বিদেশীদের বারবার বিভ্রান্ত করেছে। দেশের মানুষ মনে করেছিল ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের পরিবর্তন হবে। তারা যেভাবে জনসমর্থন শূন্য হয়ে পড়েছিল সুশাসন বা ভাল কাজের মাধ্যমে তার উন্নতি করে ফের নির্বাচন দেবে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে তারা আগের চেয়েও নগ্ন হয়ে পড়েছে। সরকার যেভাবে যারা পরিচালনা করছে তা অবৈধ। তিনি বলেন, পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে এখন প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ জনতার একটি বিশাল ধাক্কা। আমরা সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগে আমরা কাজের চেয়ে আওয়াজ বেশি করেছি। এখন আওয়াজের চেয়ে কাজটা বেশি করার চেষ্টা করছি। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে রমজান মাসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে যে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কাজ চলছে তা রমজান পর্যন্ত চলবো। তত দিনে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের দাবি মেনে সরে না দাঁড়ালে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবো। এদিকে নেতারা জানান, রাজনীতির রেওয়াজ অনুযায়ী বাজেট নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মতামত দেয়। বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিই বাংলাদেশে প্রথম ‘আগাম বাজেট প্রস্তাবনা’র রেওয়াজ চালু করেছিল। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট বর্তমান সরকারকে জনগণের সরকার হিসেবে স্বীকার করে না। তাই ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপি কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। এটা আন্দোলনের একটি অংশ। নেতারা মনে করেন, বর্তমান সরকার বড় আকারের বাজেট দিলেও তার অর্থ সংস্থান ও বাস্তবায়ন করতে পারবে না। বিরোধী দল নতুন করে আন্দোলনে মুখর হলে সরকারের অর্থসংস্থানের পথ আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে। বিএনপি নেতারা জানান, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সারা দেশে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ছিল। আন্দোলনের এক পর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্যোগে সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর উপস্থিতিতে দু’দলের মধ্যে বৈঠকও হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা সংবিধানিক বাধ্যবাদকতার দোহাই দিয়ে একটি নিয়মরক্ষার নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। বিএনপি নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের তরফে এখন সে নির্বাচনকে ৫ বছরের জন্য বলা হলেও পরিস্থিতির কথা ভুলে যাননি কূটনীতিকরা। অন্যদিকে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পক্ষে জোরালো অবস্থান ছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের। এতে ভারত বিরোধিতার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। নেতারা বলেন, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের জাতীয় নির্বাচনের দিকে নিবদ্ধ ছিল বাংলাদেশের বিরোধী জোটের দৃষ্টি। নির্বাচনে সেখানেও ক্ষমতার পটপরিবর্তন হয়েছে। এখন ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতি কেমন হয় সে অপেক্ষা। বিএনপি নেতারা মনে করেন, ভারতের পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন আসুক বা না আসুক বিগত কংগ্রেস সরকারের মতো একদলভিত্তিক সম্পর্কে সীমিত থাকবে না। এদিকে নতুন করে কূটনীতিক দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বিএনপি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাদের পূর্ণ নজর ঢাকায় কেন্দ্রীভূত করতে চায় দলটি।

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone