রৌদ্রোজ্জ্বল সমুদ্রসৈকত থাইল্যান্ড
পর্যটন ডেস্কঃ সেনা অভ্যুত্থান ও সান্ধ্য আইনের পর থাইল্যান্ডের সম্ভাবনাময় পর্যটনশিল্পে ধস নেমেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি পর্যটকদের কাছে ছিল জনপ্রিয়।
গত ২২ মে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটিতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। কয়েক মাস ধরে দেশটিতে চলে রাজনৈতিক অস্থিরতা। জারি করা হয় সান্ধ্য আইন। আর এর প্রভাবে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের হোটেলগুলো হয়ে পড়েছে পর্যটকশূন্য।
এএফপিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাংককের একটি বিলাসবহুল হোটেলের ব্যবস্থাপক বলেন, হোটেলে অতিথির হার ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। এক বছর আগেও হোটেলে আসা পর্যটকদের হার ছিল ৭০ শতাংশ।
গত শুক্রবার পর্যটন ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগের তুলনায় মে মাসে বিদেশি পর্যটক আসার হার ১০.৬ শতাংশ কমে গেছে।
কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হোটেলে বুকিং কমে গেছে। থাইল্যান্ড সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল পর্যটকদের সংখ্যা ২৮ মিলিয়নে পৌঁছানো। কিন্তু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর তাঁদের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে ২৫.৯ মিলিয়ন।
থাইল্যান্ডে হংকং, জাপান ও তাইওয়ানের লোকজনই বেশি ভ্রমণ করেন। কিন্তু এখন এসব দেশ থেকে পর্যটক যাওয়ার হার কমে গেছে।
পর্যটন সংস্থা ইজিএল ট্যুরের নির্বাহী পরিচালক স্টিভ হুয়েন বলেন, তাঁরা থাইল্যান্ডে ভ্রমণের প্যাকেজ বন্ধ করে দিয়েছেন। হংকংয়ের সরকার থাইল্যান্ডে ভ্রমণের ওপর লাল সতর্কতা জারি করেছেন।
২০১৩ সালে থাইল্যান্ডে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২৬.৫ মিলিয়ন। রৌদ্রোজ্জ্বল সমুদ্রসৈকত এবং জমজমাট রাতের কারণে দেশটির প্রতি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ রয়েছে।
কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের কারণে ব্যাংককে পর্যটকের সংখ্যা কমছে। ব্যাংককের একটি দোকানের বিক্রেতা ফংসাথ্রন ওংগুচেন বলেন, ‘সেনা অভ্যুত্থানের পর আমি খুব সামান্যই আয় করেছি। জীবন এখন আগের চেয়ে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।’
তবে পর্যটকদের আকর্ষণ ফিরিয়ে আনতে দেশটির পাতোয়া, কো সামুই, ফুকেট প্রভৃতি রিসোর্টে কার্ফ্যু তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে থাইল্যান্ডবাসী আশা করছে সান্ধ্য আইন তুলে নেওয়ার পর দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। লেবুয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের প্রধান নির্বাহী দীপক ওহরি বলেন, যদি সুনামি আসে, বন্যা আসে বা রাজনৈতিক কোনো ঘটনাও ঘটে, তার পরও সবশেষে পর্যটকেরা ফিরে আসেন।