আষাঢের বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীর
মোঃ জাফর ইকবাল, ঢাকা : গত এক সপ্তাহের দফায় দফায় বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি অনেকে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও দিনমজুরদের কাজেও ছিল ভাটা। রোববার সকাল থেকেই থেমে থেমে রাজধানীতে বৃষ্টি হয়। ফলে দিনভরই ভোগান্তিতে কাটাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।
থেমে থেমে নামা কয়েক দফার বৃষ্টির ফলে রাজধানীর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষকেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
আষাঢের প্রথম থেকে কয়েক দফার বৃষ্টিতে রাজধানীর শান্তিনগর, গুলশান, মালিবাগ, মৌচাক, মতিঝিলের মুগদা, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কাফরুলসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে রাস্তায় নিয়মিত প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে গাড়ি থেকে নেমে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বৃষ্টির কারণে গণপরিবহণের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশার পাশাপাশি রিকশা চালকদের ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকানোর ফলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে সাধার্তমানুষকে বেশি টাকা গুণতে হয়েছে।
অনেককে আবার বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বিভিন্ন যাত্রী ছাউনিসহ রাস্তার আশপাশের ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন বয়সি ছেলেদের ফুটবল খেলতে দেখা গেছে। অনেককে আবার বৃষ্টিতে নিজেদের ভিজিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে সকাল থেকে প্রবল বর্ষণের কারণে অনেককে আবার বাসা থেকে বের হয়ে মূল রাস্তায় উঠতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর অলিগলির রাস্তায় পানি জমে যায়। আর এ কারণে গলি থেকে মূল সড়কে রিকশা ছাড়া আসতে পারেননি অনেকেই।
বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন দিনমজুর আর ফুটপাতের দোকানিরা। দিনমজুররা সারাদিনে যেমন কোনো কাজ যোগড় করতে পারেননি, তেমনি একই কারণে দোকান খূলতে পারেননি স্পল্পপুঁজির ব্যবসায়ীরা
গত শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা তথ্য কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানি বাড়তে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮৪টি পানি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৫৫টি স্থানে পানি বৃদ্ধি এবং ২০ স্থানে পানি হ্রাস পেয়েছে। তিনটি স্থানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ৬টি স্থানের তথ্য পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে ২৭০ মিলিমিটার, সিরাজগঞ্জে ১৭০.৩ মিলিমিটার, পাবনায় ১৫১ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ১১০ মিলিমিটার, নোয়াখালীতে ৭২ মিলিমিটার, নওগাঁয় ৭৫ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ২২৩ মিলিমিটার, পাঁচপুকুরিয়ায় ১৮৬ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ৭৮ মিলিমিটার, খুলনায় ৯৫ মিলিমিটার, বান্দরবানে ৮৮ মিলিমিটার, রামগড়ে ৭০ মিলিমিটার, বরগুনায় ৬০ মিলিমিটার, ডালিয়ায় ৫৯ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জে ৭৫ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ৭৩ মিলিমিটার, নারায়ণহাটে ৯০ মিলিমিটার, লরেরগড়ে ৫০ মিলিমিটার, মহাদেবপুরে ৫৮.৪ মিলিমিটার, কুষ্টিয়ায় ১১১.৪ মিলিমিটার, লামায় ১২৬ মিলিমিটার, রাঙ্গামাটিতে ১৩২ মিলিমিটার, রাজশাহীতে ৫৬ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ৯০ মিলিমিটার, বরিশালে ৬৫ মিলিমিটার এবং কুড়িগ্রামে ৪৬.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।