ভোটার শূন্য কেন্দ্র, বাইরে মহড়া
মোঃ জাফর ইকবাল: নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের উপনির্বাচনে ভোটারদের তেমন সাড়া মেলেনি। ভোট শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায় কেন্দ্রগুলো ছিল দৃশ্যতঃ ফাঁকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। একটানা তা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ভোট শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টা কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা একেবারেই কম দেখা গেছে। এ সময় কেন্দ্রগুলোর বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাসিম ওসমানের সমর্থকদের মহড়া দিতে দেখা গেছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ, ভাইকে জেতাতে গডফাদার হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান নির্বাচনী এলাকায় তার লোকজন পাঠিয়েছন। তারাই কেন্দ্রের বাইর মহড়া দিচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তে তারা জালভোট ও ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো অঘটন ঘটাতে পারে।
কুড়িপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২ নং বুথে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একটি মাত্র ভোট পড়েছে। তবে কেন্দ্রে কতটি ভোট পড়েছে তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান প্রিজাইডিং অফিসার আজহারুল ইসলাম।
জামেয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ২৫৯টি। প্রিজাইডিং অফিসার তাপস কুমার সাহা জানান, প্রথম ঘন্টায় ৩৬টি ভোট কাস্ট হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার অন্যান্য কেন্দ্রেও ভোটার উপস্থিতি কম।
এছাড়া অনেক কেন্দ্রে বেলা ১১টা নাগাদ ৩ থেকে ৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। কেন্দ্রগুলোতে কোথাও তেমন ভোটারদের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজনকে এসে ভোট দিতে দেখা যায়।
অবশ্য ভোটার কম হওয়ার জন্য ‘বিরূপ’ আবহাওয়াকে দায়ী করছেন প্রার্থী ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের মতো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৯-দলীয় জোট। মূলতঃ এই কারণেই এই নির্বাচনে সাধারণ মানুষের তেমন সাড়া মেলেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, নিরাপত্তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের তর্জন-গর্জন মূলতঃ বক্তৃতা-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অনেক কেন্দ্রে কেবল আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। কোথাও দু-একজন পুলিশ সদস্য দেখা গেলেও র্যাদব-বিজিবির টহল তেমন চোখে পড়েনি।
এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এস এম আকরামের। এছাড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সমর্থিত শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন সিরাজুল মজিদও নির্বাচনে লড়ছেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। বিগত ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে এই আসনে বিনা ভোটে ‘নির্বাচিত’ হন তিনি।