ভোট জালিয়াতি হয়েছে না.গঞ্জের উপ-নির্বাচনে
মোঃ জাফর ইকবাল, ঢাকা : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় উপ-নির্বাচনে কোন সহিংসতা না ঘটলেও বিপুল সংখ্যক ভোট জালিয়াতি হয়েছে ও ৩০ ভাগ ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট প্রদানের ঘটনা ঘটায় নির্বাচন অবাধ হয়নি। পর্যবেক্ষণকৃত ভোটকেন্দ্রসমূহে ভোট প্রদানের গড় হার ৪৩.৫ শতাংশ হলেও জাল ভোটের কারণে এই পরিসংখ্যানে ভোট প্রদানের প্রকৃত হারের প্রতিফলন ঘটেনি। এমনটাই দাবি করেছেন ২৭টি বেসরকারী সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আয়োজিত নির্বাচন পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন ইডব্লিউজির পরিচালক ড. মো. আব্দুল আলীম।
এ সময় তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ উপ-নির্বাচনে ১৪১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬০টি কেন্দ্রে মোট ৬০ জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে। ব্যাপক-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণে ইডব্লিউজি ভোটকেন্দ্র প্রস্তুতকরণ এবং খোলার সময়কাল, ভোটগ্রহণ কার্যক্রম, ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের সমাপ্তি, ভোটগণনা এবং ভোটকেন্দ্রের ভেতরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে ড. আলীম বলেন, পর্যবেক্ষণকৃত ৬০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টি কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।
বিশেষ করে, ১১ নং ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রে একদল লোক প্রবেশ করে ৮-১০ টি ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে তার মধ্যে সিল দিয়ে ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ভোটগ্রহণকারী কর্মকতাগনকে ঘটনা সংগঠনকারীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এমন কি প্রতিপক্ষ প্রার্থীর এজেন্টগণকে এ সময় নিশ্চুপ থাকতে দেখা গেছে।
অপর আলীরটেক এলাকার একটি কেন্দ্রে ৫০-৬০ জন লোকের একটি দল প্রবেশ করে, তারা সেখানে প্রায় ২ ঘণ্টা অবস্থান করে এবং ব্যালট পেপার নিয়ে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। প্রিজাইডিং অফিসারকে তারা হুমকি দেওয়ার কারণে তিনি নিশ্চুপ ছিলেন।
জনাব আলীম আরো বলেন, দুপুর ২টার পর ১৩ নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অবৈধভাবে কিছু লোক প্রবেশ করে। এ সময় ঐসব কেন্দ্রে প্রাক্কলিত ভোট প্রদানের হার ছিল ১০ শতাংশের মত। কিন্তু দুপুর আড়াইটার পর এই হার ৪০ শতাংশের মত হয়ে যায়। একইভাবে ১৫ নং ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৩২, বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৯০টি ভোট পড়ে। এসময় ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষককে আধা ঘণ্টার জন্য বের করে দেওয়া হয় এবং বিকাল সাড়ে ৩টায় তাকে প্রবেশ করতে দিলে তিনি দেখেন আধা ঘন্টা সময়ে আরও ২৭৮টি ভোট পড়েছে। অপরদিকে ধামগড় এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ৭-৮ জন লোক প্রবেশ করে বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার নিয়ে তাতে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়।
জনাব আলীম বলেন, পর্যবেক্ষক কার্ড থাকা সত্ত্বেও ইডব্লিউজির একজন পর্যবেক্ষককে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেন এবং ভোট গণনার সময় ইডব্লিউজির ৮ জন পর্যবেক্ষককে গণনা কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।