রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। পাইকারী বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়েনি বলেও তাদের দাবি। রমজানের আগের দিন বেগুনি তৈরির অন্যতম পদ প্রতিকেজি লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা সপ্তাহখানেক আগেও ছিল মাত্র ৩০ টাকা।
এদিকে, কোনো কারণ ছাড়াই ভোক্তার কাছ থেকে কেজিতে হাতিয়ে নিচ্ছে ৬০ টাকা। খেজুর, ছোলা, মুড়ি ও পিয়াজ- এ চার পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কৌশলী অবস্থান নিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে এসব পণ্যের দাম এক সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একদিন ২ টাকা, পরের দিন ৩ টাকা- এভাবে ধীরগতিতে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। ছোলা ৫৫ টাকা, মুড়ি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পিয়াজ ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির সিনিয়র কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির জানান, পণ্যের সিন্ডিকেট সংক্রান্ত কোন দায় টিসিবির নেই। টিসিবির কাজ হচ্ছে মূল্য সংগ্রহ ও ডিলারের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে বিশেষ কিছু পণ্য বিক্রি করা।
তিনি বলেন, সারা বছর তেল, চিনি ও মসুর ডাল বিক্রি করি। নতুন করে রমজানে খেজুর ও ছোলা বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রমজান উপলক্ষে ১৫০ টন খেজুর ও ১৫০৮ টন ছোলা মজুদ করা হয়েছে। শেষ রমজান পর্যন্ত এসব পণ্য বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানান টিসিবির এ কর্মকর্তা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এফবিসিসিআইয়ের জাতীয় মনিটরিং সেলের উচ্চ পর্যায়ের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন বাজারের ঊর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেটের বিষয়টি মানতে নারাজ। তিনি জানান, বাজার স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছে।
যেটুকু বেড়েছে তার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি আরও বলেন, দোকান ভাড়া, বাড়ি ভাড়া, কর্মচারী খরচ ও পণ্য আনা-নেয়ায় যে খরচ হয় তাতে দাম বৃদ্ধির ওই টাকা কিছুই হয় না। গত রমজানের চেয়ে এ রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার অনেকটা সহনীয় রয়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী এ নেতা। এদিকে টমেটোসহ সব ধরনের সবজিতে কেজি ও মুঠাপ্রতি দাম ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রমজানের আগের দিন রাজধানীর কাওরান বাজার, যাত্রাবাড়ী, জুরাইনসহ বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশী আলু কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও সাদা ২৪ টাকা, কাকরল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা, কুমড়া (জালি) ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুর লতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পটল ২৪ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কলমি শাক ৫ টাকা আঁটি, কলা এক হালি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ ও পাতাকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর চাল কেজিপ্রতি নতুন ৩৬ থেকে ৩৭, পুরাতন ৪০ থেকে ৪২ টাকা, নাজিরশাল ৪৬ থেকে ৫২ টাকা, মাঝারি (পারিজা, বিআর-২৮) ৩৬ থেকে ৪০ টাকা, মোটা চাল (বিআর-৮ ও ১১) ৩২ থেকে ৩৩ টাকা, গুটি, স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সোয়াবিন তেল (খোলা) প্রতি লিটার ৯৮ থেকে ১০৫ টাকা, সরিষার তেল ১৪০ থেকে ১৫০ দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মশুরের ডাল দেশী (উন্নত) কেজিপ্রতি ১০৪ থেকে ১১০ টাকা, মুগ ডাল ১১০ থেকে ১১৫, ইন্ডিয়ান মুশুরের ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।