গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ : জাতিসংঘ
গাজা সিটি, ২৪ জুলাই, ২০১৪ (বাসস) : জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান ভ্যালেরি অ্যামোস গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সেখানে অস্ত্রবিরতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, সংঘাতের ফলে গাজার ৪৪ শতাংশ এলাকায় ফিলিস্তিনিরা যেতে পারছেন না। পাশাপাশি বাসিন্দারা খাদ্য সংকটেও রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গাজায় গত ১৬ দিন ধরে চলা যুদ্ধে ৭শ’ ২৩ জনের বেশি ফিলিস্তিনি ও ৩২ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের স্থল অভিযান ও বিমান হামলা এবং গাজা থেকে ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গাজা থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা বন্ধে সেখানে অপারেশন প্রটেকটিভ এজ শুরু করা হয়েছে বলে দাবি তেলআবিবের।
ভ্যালেরি অ্যামোস বৃহস্পতিবার বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন স্কুলে ১ লাখ ১৮ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে। বাসিন্দারা খাদ্য সংকটে রয়েছেন। পানি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
তিনি বলেন, গাজার সামগ্রিক পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’।
গাজা থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা বন্ধে তেলআবিব কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিমান হামলা ও নৌঘাঁটি থেকে গোলাবর্ষণের পর গত বৃহস্পতিবার থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিস জানায়, গাজার ৪৪ শতাংশ এলাকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।
ভ্যালেরি বলেন, ইসরাইলের নিজেদের সুরক্ষার অধিকারের দাবি কেউ প্রত্যাখান করছে না। তবে গাজায় বেসামরিক নাগরিকরা এর জন্য যে চরম মূল্য দিচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক।
এদিকে ইসরাইলগামী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় বিমান কর্তৃপক্ষ। ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর থেকে এক মাইল দুরে একটি রকেট এসে পড়ার পর মঙ্গলবার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেছেন, তিনি ফিলিস্তিনের প্রত্যেক নাগরিকের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করছেন। তবে এও বলেছেন, এসব মৃত্যুর জন্য হামাস দায়ী।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড এ সময় নেতানিয়াহুর পাশে ছিলেন। হ্যামন্ড বলেন, ইসরাইলের বিভিন্ন শহর ও নগরে নির্বিচারে হামাসের শতশত রকেট নিক্ষেপের ফলে সহিংসতা বাড়ছে। তিনি বলেন, ব্যাপক বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনায় যুক্তরাজ্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
সম্প্রতি দখলকৃত পশ্চিম তীরে তিন ইসরাইলি কিশোর ও জেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে হত্যার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইলি তিন কিশোরকে হত্যার জন্য হামাসকে দায়ী করা হয়। তবে হামাস এ অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। এর কয়েকদিন পর পূর্ব জেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে অপহরণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন ৬ ইহুদীকে আটক করে। এরপর মূলত ইসরাইল ও হামাস পাল্টপাল্টি হামলা শুরু করে।
গাজা থেকে ইসরাইলে জঙ্গিদের রকেট হামলা বন্ধে তেলআবিব কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিমান হামলা ও নৌঘাঁটি থেকে গোলাবর্ষণের পর বৃহস্পতিবার থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম শুরু করে। এর পর থেকে নিয়মিত রক্ত ঝরলেও আজও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।