২০১৫ বিশ্বকাপে খেলব এমন সম্ভাবনা দেখছিনা : মোহাম্মদ আমির
স্পোর্টস ডেস্কঃ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ২০১৫ বিশ্বকাপে নিজের খেলার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত পেস বোলার মোহাম্মদ আমির। শান্তির মেয়াদ কমানো এবং এ বছরের শেষ দিকে তাকে পুনরায় খেলায় ফেরানোর জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) সম্মত করাতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া সত্বেও আগামী বছর বিশ্বকাপে খেলার বাস্তব কোন সম্ভাবনা দেখছেন না বলে স্বীকার করেন স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে পাঁচ বছরের নিষিদ্ধাদেশের মধ্যে থাকা ২২ বছর বয়সী আমির।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নিষিদ্ধাদেশ উঠে যাওয়ার আগে আমির যাতে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ফিরতে এবং অনুশীলন করতে পারে সেজন্য পিসিবি অনেক আগেই আইসিসির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। দুর্নীতি বিরোধী নতুন আইনের ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেয়ার আগে আগামী অক্টোবরে বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন আইসিসির তিন সদস্যের উপকমিটি। ২০১০ সালে পাকিস্তান দলের ইংল্যান্ড সফরে স্পট ফিক্সিংয়ের অপরাধে ২০১১ সালের প্রথম দিকে আমিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী কমিটি। তবে তার শান্তির মেয়াদ শুরু হবে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। স্থানীয় জিও সুপার চ্যানেলকে তরুণ এ ফাস্ট বোলার বলেন, ‘বিশ্বকাপে নিজকে খেলতে দেখছিনা আমি। এটা বাস্তব সম্মত নয়। কেননা সব কিছ কিছুকেই একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগুতে হয়। আমার বিষয়টি আইসিসির কাছে তুলে ধরার জন্য আমি পিসিবির কাছে কৃতজ্ঞ। যখনই আমাকে অনুশীলন অথবা খেলার অনুমতি দেয়া হবে আমি প্রস্তুত।’ বিশ্ব ক্রিকেট থেকে স্পট ও ম্যাচ ফিক্সিং দূর করতে আরো জোড়ালো পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল বলেও উল্লেখ করেন আমির। তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি সেটা ভুল এবং আমি সুনাম এবং সম্পদ হারিয়েছি। আমি ভুল পথে গিয়েছিলাম। যে সকল লোক ক্রিকেটের সুনাম নষ্ট করে খেলাটিকে ভুল পথে এবং দুর্নীতির পথে নিতে চায় তাদেরকে থামানো দরকার।’ ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে তরুণ খেলোয়াড়দের নজরে রাখার জন্য সিনিয়র খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে একটি কমিটি করার জন্য আমি পিসিবিকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। একই সঙ্গে জাতীয় দলের জন্যও এমন একটা কমিটি করতে বলেছিলাম। বিশ্ব ক্রিকেটের ভুল পথ থেকে খেলোয়াড়রা যাতে দূরে থাকে সেজন্য তাদেরকে তৈরী করা ও শিক্ষিত করে তোলার জন্য এই কমিটি করতে বলেছিলাম।’ নিজের খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে তিনি যখন তারকা খ্যাতি ও অনেক সম্পদের মালিক হচ্ছিলেন তখন কোন সিনিয়র খেলোয়াড় পদক্ষেপ নিতেন এবং তাকে থামাতেন তবে আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘নতুন খেলোয়াড়দের শিক্ষা নিতে সিনিয়ররা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। তবে শেষ কথা হলো একজন খেলোয়াড়কে তার নিজেরই সৎ থাকতে হবে। আপনি সৎ থাকলে কেউ আপনাকে স্পর্শ করতে পারবেনা।’ নিউজিল্যান্ড সরকার দোষী খেলোয়াড়দের সাত বছরের জেল দেয়ার যে নতুন নিয়ম চালু করেছেন তাতে পূর্ণ সমর্থন জানান আমির এবং ম্যাচ ফিক্সিং করে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়া পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিক। মালিক বলেন, ‘এটা নিউজিল্যান্ড সরকারের একটা ভাল পদক্ষেপ। কেনানা এ ধরনের পদক্ষেপ খেলোয়াড়দের ভুল পথে যেতে নিরুৎসাহিত করবে।’ ক্রীড়া ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধে পাকিস্তান সরকার এমন পদক্ষেপ নিলেও তিনি খুশি হবেন বলে জানান মালিক। তিনি বলেন, ‘যেকোন ক্রীড়ায়ই দুর্নীতি একটি বাস্তবতা এবং এ থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। না হলে ক্রিকেটের যেমন সুনাম ক্ষুন্ন হবে তেমনি খেলোয়াড় এবং তাদের পরিবারের ভাবমুর্তিও নষ্ট হবে।’ কোন খেলোয়াড় দোষী প্রমাণিত হলে তাকে সাত বছর জেল দেয়াসহ যে কোন পদক্ষেপকেই সমর্থন করবেন বলে জানান আমিরও।