জনি হত্যার দায়ে ফাঁসলেন এসআই জাহিদ
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঝুট ব্যবসায়ী সুজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই জাহিদ ও পল্লবী থানার ওসি জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রনি।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জহিরুল হকের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি শেষে মামলা গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী সুজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, পল্লবী থানার ওসি জিয়াউর রহমান, এসআই আব্দুল বাতেন, রাশেদ, শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুল, পুলিশের সোর্স সুমন ও রাসেল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পল্লবী থানাধীন ইরানি ক্যাম্পে জনৈক বিল্লালের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। নিহত জনি, তার ভাই মামলার বাদী রনিসহ অন্যান্য সাক্ষীরা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাত ২টার দিকে পুলিশের সোর্স এ মামলার ৭ নম্বর আসামি সুমন মদ খেয়ে স্টেজে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছিলেন। জনি তাকে প্রথমে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার সুমন একই কাজ করলে সুমনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জনি সুমনকে একটি থাপ্পর মারেন। থাপ্পর খেয়ে সুমন জনিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে যান।
এজাহারে আরো বলা হয়, এর আধা ঘণ্টা পর সোর্স সুমন এসআই জাহিদসহ ২৫/২৬ জন পুলিশ ও তার লোকজন নিয়ে এসে বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে সেখানে ভাঙচুর করেন। নিহত জনি, রকিসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যান।
এরপর এসআই জাহিদসহ অপর আসামিরা তাদের পল্লবী থানা হাজতে হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করেন। জাহিদ জনির বুকের ওপর চড়ে লাফালাফি করেন। জনি এ সময় একটু পানি খেতে চাইলে জাহিদ তার মুখে থুথু নিক্ষেপ করেন। আসামিদের নির্যাতনে মামলার বাদী রনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বড় ভাই জনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর ওই সময় ইরানী ক্যাম্পে রকিসহ কয়েকজনকে গুরুতর আহত ও তার ভাই জনিকে মারামারিতে নিহত দেখানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। পরে এ রকম সাজানো ঘটনায় পল্লবী থানার এসআই শোভন কুমার সাহা বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওসি জিয়াউর রহমান তা এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন।
উল্লেখ্য, ওই ঘটনার পর এসআই জাহিদকে রাজারবাগে প্রত্যাহার করে মিরপুর বিভাগের ডিসি ইমতিয়াজ আহমেদকে প্রধান করে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পরবর্তীতে জমা দেওয়া হলেও পুলিশকে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।