বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » গুগলের কল্যাণে ১৭ বছর পর বাবা-মাকে ফিরে পেল হারানো মেয়ে

গুগলের কল্যাণে ১৭ বছর পর বাবা-মাকে ফিরে পেল হারানো মেয়ে 

পরিমল দেবনাথ, কলকাতা প্রতিনিধি : গুড়িয়াকে বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাসা করলেই সে বলত, ‘সেই একটা বিস্কুট কারখানা আছে না, সেখানে কাকা কাজ করে।’
পাটনার একটি রেলক্রসিংয়ের কাছে সেই বিস্কুটের কারখানাই ছিল গুড়িয়াকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র সূত্র। আর কিছু মনে করতে পারত না গুড়িয়া। মনে ছিল না বাবা-মায়ের নামও। 

google

মাত্র ৬ বছরে ট্রেনে হারিয়ে যাওয়ার পর আসামের এক সরকারি কর্মীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা, গুড়িয়ার আবছা স্মৃতি এবং গুগলের সাহায্যে ১৭ বছর পর বাবা-মার কাছে ফিরতে পারল বিহারের মেয়েটি। গুড়িয়ার বয়স এখন ২৩।

গুড়িয়ার গল্প যেন বলিউডের চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। ১৯৯৭-এর এপ্রিলে পটনা থেকে মামার সঙ্গে গুয়াহাটি যাচ্ছিল গুড়িয়া। তার দাদু তখন অসুস্থ। যাওয়ার পথে বারাউনি স্টেশনে কিছু খাবার-দাবার কিনতে ট্রেন থেকে নেমেছিলেন মামা। কিন্তু ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় আর উঠতে পারেননি মামা। ট্রেনে চেপে গুড়িয়া পৌঁছে যায় আসামের গুয়াহাটিতে। সেখানে রেল আধিকারিকরা তাকে উদ্ধার করে সরকারি হোমে পাঠিয়ে দেন।

সরকারি হোমে গুড়িয়াকে জিজ্ঞাসা করে তার বাড়ির হদিশ কিছু পাওয়া যায়নি। সে শুধু মনে করতে পারত, পটনায় তার বাড়ির কাছে এক রেলওয়ে ক্রসিংয়ের সামনে একটা বিস্কুটা কারখানা রয়েছে। আর সেখানে কাজ করেন তার কাকা। এইটুকু সূত্র ধরে গুড়িয়ার বাবা-মাকে খুঁজে বের করার কাজ করা যায়নি।

ততদিনে আস্তে আস্তে হিন্দি ভাষা ভুলে অসমিয়াতেই কথা বলতে শিখেছে গুড়িয়া। ওই হোমে কাজের সূত্রে এসেই গুড়িয়ার বিষয়ে জানতে পারেন আসামের শিশু সুরক্ষা দফতরের কর্মী নিলাক্ষী শর্মা। তিনি এরপর শুরু করেন গুড়িয়ার বাবা-মায়ের খোঁজ।

গত মাসেই স্বামীর সঙ্গে নিলাক্ষী পটনায় এসে গুড়িয়ার বাড়ির খোঁজ করেন নিলাক্ষী। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। নিলাক্ষী জানিয়েছেন, আশাভঙ্গের হতাশা নিয়ে আসামে ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু চেষ্টা থামাননি। গুগলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পটনা, পটনার রেলক্রসিং, বিস্কুট কারখানার খোঁজ চালাতে থাকেন তিনি।

তারপর একদিন আচমকাই নিলাক্ষী পটনার একটি বিস্কুট কারখানার ফোন নম্বর পেয়ে যান। আর ওই ফোন নম্বরে ফোন করতেই মিলে যায় গুড়িয়ার বাবা-মার হদিশ। খবর দেওয়া হয় গুড়িয়ার বাবা-মাকে।

গত সোমবার তারা গুয়াহাটিতে ছুটে যান। সেখানে ১৭ বছর পর তাদের হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। গুড়িয়া এখন আর হিন্দিতে কথা বলতে পারে না। তাতে কী! মেয়েকে ফিরে পেয়ে গুড়িয়ার বাবা-মা বেজায় খুশী। আর এতদিনের প্রয়াস সফল হওয়ায় নীলাক্ষীও দারুণ আনন্দিত।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone