সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে কোরবানির পশুর হাট
রোকন উদ্দিনঃ সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর ২০টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট। এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে টেন্ডারে কাঙ্ক্ষিত দর পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন।
এ সিন্ডিকেট এতোই শক্তিশালী ইতিপূর্বে একাধিকবার পুনরায় দরপত্র আহ্বান সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত দর পায়নি সিটি করপোরেশন।
জানা যায়, গত বছর সিন্ডিকেটের কারণে বহুল আলোচিত আরমানিটোলা খেলার মাঠের দরপত্র আগের বছরের তুলনায় কমেছে ২ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা
কোরবানির পশুর হাট (ফাইল ছবি)
মেরাদিয়া বাজার খিলগাঁও হাটের দরপত্র কমেছে ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা।গত বছর ২২ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কোরবানির ১০টি হাটের ইজারার দরপত্র খোলা হয়।গত বছর আরমানিটোলা হাটের ৬টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা ইলিয়াস রশিদ ২ কোটি ১১ লাখ ৫০১ টাকা।এর আগের বছর সর্বোচ্চ দর ছিল ৪ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মেরাদিয়া বাজার খিলগঁাঁও হাটের ৪টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মো. শরিফ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে এর আগের বছর সর্বোচ্চ দর ছিল ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। পোস্তগোলা শশ্মানঘাঁট হাটের ৩টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ হাজী মো. রুবেল ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ ৫টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ শহিদ উদ্দিন সেলিম ২৫ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা। ধুপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ ৩টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। গোলাপবাগ মাঠ ৬টি দরপত্রের সর্বোচ্চ জমির আলী ৬১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। সাদেক হোসেন খেলার মাঠ ৩টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ রশিদুল হক ভুঁইয়া ২৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা। রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ ৪টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ রহমতগঞ্জ মুসলিম সোসাইটি ক্লাব ৬ লাখ ৩১ হাজার ৬৮৯ টাকা। ঝিগাতলা হাজারীবাগ ৭টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৫ লাখ ৩৪ হাজার ২০ টাকা।এবার ঢাকা দক্ষিণ আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইজারার দরপত্র গ্রহণ করবেন কর্তৃপক্ষ।১২টি হাটের মধ্যে রয়েছে- ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, মেরাদিয়া বাজার, নারিন্দা সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, গোলাপবাগ মাঠের পাশে সিটি করপোরেশনের আদর্শ স্কুল মাঠ, বাবুবাজার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা (আরমানিটোলা), উত্তর শাজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার সংলগ্ন মৈত্রী সংঘের মাঠ, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ, গোপীবাগে ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, পোস্তগোলা শশ্মান সংলগ্ন খালি জায়গা, বাংলাদেশ মাঠ এবং কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন জায়গা।
এদিকে সোমবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৮টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটের ইজারার দরপত্র জমা নেয়া হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে ৬০টি শিডিউল বিক্রি হলেও জমা হয়েছে ৭টি হাটের জন্য ২৪টি দরপত্র।
অন্যটি ঢাকা পলিটেকনিকের খেলার মাঠের জন্য কোনো দরপত্র জমা পড়েনি। ৮টি কোরবানির পশুর হাট হচ্ছে- আগারগাঁও, খিলক্ষেত, উত্তরা আজমপুর, সোনারগাঁও জনপদ, তেজগাঁও পলিটেকনিকের মাঠ, বারিধারা জে ব্লক, মিরপুর-৬ এবং বনানী রেলস্টেশন সংলগ্ন খালি জায়গা।
জানা গেছে, শাসকদলীয় এ সিন্ডিকেট চক্র এতোটাই প্রভাবশালী যে, এবার পশুর হাটের জন্য তাদের বাইরে অন্য কেউ প্রায় শিডিউলই কিনতে পারেনি। আবার যারা নানা কৌশল করে শিডিউল কিনেছেন তাদের প্রায় কেউই সেই শিডিউল জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, রাজধানীতে অস্থায়ী পশুর হাটের প্রধান নির্বাহী আহ্বায়ক করে একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আগামীকাল জমা পড়া দরপত্রগুলো খোলা হবে। তিনি বলেন, যদি কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়া যায়, তাহলে কমিটি পুনঃদরপত্র আহ্বান করবে।