নেপালের ঐতিহ্যবাহী ভক্তপুর
রোকন উদ্দিনঃ আমাদের প্রতিবেশী দেশ নেপাল। নেপালের রাজধানী থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে অদ্ভুত এক শহর ভক্তপুর। এটি ছিলো প্রাচীন নেপালের রাজধানী। নেপালের ঐতিহ্যবাহী ভক্তপুরকে স্থানীয়রা কাছে বুদগাঁও নামে চেনে। আর একটা নাম ছিলো এর , খৌপা।নেপালের প্রাচীন রাজারা বাস করতেন ভক্তপুরে। আর এ কারণেই প্রচুর ধর্মীয় উপাসনালয় গড়ে উঠেছে এখানে। স্থানীয়দের অনেকেই কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তবে মৃৎশিল্প ও বয়ন শিল্পের জন্যও বিখ্যাত এই ভক্তপুর।
ইতিহাস:
জানা যায় ১২ শতকের দিকে রাজা আনন্দ মাল্লা প্রতিষ্ঠা করেন এই নগরী। মাল্লা রাজবংশের শাসনে ভক্তপুর চোদ্দ থেকে ষোল শতকের মাঝে পেয়ে চায় উন্নত কাঠামো। মাল্লা রাজবংশের শৌখিন রাজা ইয়াকশা মাল্লার (১৪২৮-১৪৮২) শাসন সময়ে গড়ে ওঠে নগরীরর অধিকাংশ স্থাপত্য । সতের শতকের রাজা ভূপতিন্দ্র মাল্লা ছিলেন ধর্মপ্রাণ। তাঁর সময়েই স্থাপিত হয় ধর্মীয় স্থাপনাগুলো। ভূপতিন্দ্র মাল্লার শাসন সময়েই ভক্তপুরে ছিলো প্রায় ১৭২টি মন্দির। পনের শতক থেকে ভারত-তিব্বত বাণিজ্যপথের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় এ নগর। অবশ্য ১৭৬৮ সালে প্রিথভী নারায়ণ দখল করে নেয়ার পর বাণিজ্যিক কেন্দ্র থেকে সরে আসে ভক্তপুর। আর ১৯৩৪ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয় নগরটি। তারপর নেপালীদের প্রচেষ্টায় এটি আবার তার স্বরূপে ফিরে আসে।
দর্শনীয় স্থাপত্য:
ভক্তপুরে দর্শনীয় স্থাপত্যের মাঝে রয়েছে—পশ্চিম তামূধি তোল গেট, পটারস্ স্কয়ারের সিংহদ্বার, পটার’স স্কয়ার, তামূধি তোল, নয়া তাপোলা মন্দির, ভৈরবনাথ মন্দির, তিল মহাদেব নারায়ণ মন্দির, দরবার স্কয়ার, এরোটিক এলিফ্যান্টস মন্দির, উগরাচান্দি এবং ভৈরব মূর্তি, রাজা ভূপতিন্দ্র মাল্লার কলাম, ভত্সলা দুর্গা মন্দির এবং তেলেজু ঘণ্টা, রাজভবন, ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি, সোনালি গেট, চায়াসিলিন মণ্ডপ, সিদ্ধি লক্ষ্মী মন্দির, ফাসিদেগা মন্দির, তাধূনচেন বাহাল, তাচুপাল তোল, দত্তনারায়ণ মন্দির, ভীমসেন মন্দির, তাচুপাল জাদুঘর।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকায় নেপালের দূতাবাস থেকে একটা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে নিবেন। আবেদন যথাযথ হলে, একদিনের মাঝে পেয়ে যেতে পারেন। তারপর বিমানে চড়ে পৌঁছে যাবেন কাঠমাণ্ডু। কাঠমাণ্ডুতে সুবিধা অনুযায়ী উঠে পড়বেন হোটেলে। তারপর রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে একটা মাইক্রোবাস বা টেক্সি ভাড়া করে চলে যাবেন ভক্তপুর।
আনুমানিক খরচপাতি:
বিমান ভাড়া হাজার বিশের মতো লাগবে। হোটেল ভাড়া এলাকা ও সুযোগ-সুবিধা ভেদে ভিন্ন হবেই। এই ধরুন দুই হাজার থেকে পনের হাজার। ভক্তপুরে যাওয়ার মাইক্রোবাস ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মাঝে পড়বে। খাওয়া-দাওয়া আর অন্যান্য খরচতো আছেই।