বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Friday, November 1, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » ঈদ-পূজায় অগ্রিম টিকিট নিয়ে ঘরমুখী মানুষের সংশয়

ঈদ-পূজায় অগ্রিম টিকিট নিয়ে ঘরমুখী মানুষের সংশয় 

মোরশেদ ইকবাল, ঢাকা: এবার ঈদুল আজহা ও দুর্গাপূজা একই সময়ে হওয়ায় দূরপাল্লার পরিবহণগুলোতে গত ঈদের চেয়ে যাত্রীর চাপ পড়বে বেশি। এ কারণে অগ্রিম টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে ঘরমুখী মানুষের মাঝে এখন থেকেই সংশয় দেখা দিয়েছে। অঘোষিতভাবে অনেক পরিবহণ কোম্পানি অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। যদিও পরিবহণ কোম্পানির মালিকরা বলছেন, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করবেন তারা।   চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ থেকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে কোরবানি ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হতে পারে। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগামী ৪ অক্টোবর বিজয়ী দশমীর ছুটি রয়েছে।

lop

সড়ক পরিবহণ সমিতি সূত্র জানায়, স্বজনদের সান্নিধ্যে ঈদুল আজহা ও দুর্গাপূজা উপভোগ করতে যাত্রীদের জন্য উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬০টির বেশি রুটে বাসের আগাম টিকিট দেওয়া হবে ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও শ্যামলীর বিভিন্ন কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি করবে পরিবহণ কোম্পানিগুলো।   দেশের বৃহৎ বাস কোম্পানি সোহাগ পরিবহণ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক তালুকদার এইদেশ এইসময়কে জানান, যাত্রীদের সুবিধার্থে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট ছাড়া হবে। সরকার-নির্ধারিত যে ভাড়া আছে, তা-ই নেওয়া হবে। এর চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হবে না।   নাবিল পরিবহণের গাবতলী কাউন্টার ম্যানেজার মো. আউয়াল জানান, ঈদের সময়ে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট দিতে পারেন না। স্বাভাবিক সময়ে ১২০০ থেকে ১২৫০ জন বহন করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের। কিন্তু ঈদের আগে রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় প্রতিদিন টিকিটের চাহিদা রয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার।   এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহণ সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশন (বিআরটিসি) তাদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে। শিগগিরই এ বিষয়ে বৈঠক করে জানানো হবে বলে বিআরটিসি সূত্র জানায়।   সারা দেশের আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে। চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া ৩ অক্টোবর থেকে দেওয়া হবে ফিরতি ট্রেনের অগ্রিম টিকিট। বরাবরের মতো এবারও একজন যাত্রী চারটি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে টিকিট বিক্রি। টিকিট থাকা সাপেক্ষে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ ছাড়া এবাব ঈদেও থাকছে পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা। পাশাপাশি ঈদ-পূজা উপলক্ষে যাত্রীদের চাপ সামলাতে এবং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রেলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল এবং যাত্রী নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।   রেলের মহাপরিচালক মো. তাফাজ্জেল হোসেন বলেন, বর্তমানে রেলের মোট ৮৪৮টি কোচ রয়েছে। ঈদ-পূজা সামনে রেখে ১৩০টি কোচ মেরামত করা হয়েছে। ১৭৮টি ইঞ্জিন চালু রয়েছে। আরো ৩০টি ইঞ্জিন মেরামত করা হয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন এক লাখ ৮০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে। ঈদ-পূজা সামনে রেখে প্রতিদিন সব ট্রেন মিলিয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি করা হবে।   এ ছাড়া ঈদের আগে পাঁচ দিন ও ঈদের পরের সাত দিন ‘ঈদ স্পেশাল ট্রেন সার্ভিসের’ মাধ্যমে বাড়তি সেবা দেওয়া হবে। এ  সময় অতিরিক্ত কিছু কোচ সংযোজন করা হবে। পাশাপাশি ঈদের তিন দিন আগে থেকে মোট পাঁচ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে দুই জোড়া এবং ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, ঢাকা-পার্বতীপুর ও ঢাকা-খুলনা রুটে এক জোড়া করে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে বলে জানান তাফাজ্জেল হোসেন।   নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এবার নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঈদ ব্যবস্থাপনা সাজানো হচ্ছে। সব শ্রেণির যাত্রীদের টিকিট কেটে লঞ্চে ওঠার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হচ্ছে। টিকিটের হিসাব থেকে লঞ্চের যাত্রী সংখ্যা বের করা হবে। ধারণক্ষমতার সমপরিমাণ যাত্রী উঠলেই লঞ্চ ছাড়তে বাধ্য করা হবে। আগামীকাল রোববার নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে ঈদ লঞ্চ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নৌ মন্ত্রণালয়। যেসব লঞ্চমালিক এর বিরোধিতা করে ধর্মঘটসহ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা চালাবেন, তাদের বিষয়ে আইনগত কঠোর পদক্ষেপ নেবে মন্ত্রণালয়। লঞ্চমালিকরা প্রস্তুতির অভাবসহ নানান অজুহাতে অগ্রিম টিকিটিং ব্যবস্থা মেনে নিতে চাইবেন না বলে তথ্য রয়েছে। মালিকরা যাতে বিষয়টি মেনে নেন সে জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী লঞ্চের প্রথম শ্রেণি (কেবিন) ও দ্বিতীয় শ্রেণির (সোফা) টিকিট আগাম বিক্রি করা হয়। তৃতীয় শ্রেণি (ডেক) যাত্রীদের টিকিট লঞ্চের ভেতরে দেওয়া হয়। এ কারণে লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার সময় প্রকৃত যাত্রী সংখ্যা জানা যায় না।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone