সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাশ হচ্ছে বুধবার
সংসদ প্রতিবেদক : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আগামীকাল বুধবার পাস হচ্ছে। এটি বিচারকদের অভিশংসন বিল হিসেবে অভিহিত। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদ ফিরে পাচ্ছে বিচারকদের ইমপিচমেন্ট বা অপসারণ করার ক্ষমতা। বিলটি উত্থাপনের পর এর যাবতীয় খুঁটিনাটি দিকগুলো পরীক্ষা করে দেখেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কিমিটি। বিলটি পাসে এখন আর কোনো বাধা নেই।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল-২০১৪’ সংসদে উত্থাপনের পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। সংসদীয় কমিটি দুটি বৈঠকের পর বিল নিয়ে তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন রোববার সংসদে উপস্থাপন করে। সংবিধান সংশোধনের বিল কণ্ঠভোটের সঙ্গে সঙ্গে বিভক্তি ভোটের মাধ্যমে পাস করানোর বিধান রয়েছে। এ লক্ষ্যে ভোটের ব্যালটও তৈরি করা হয়েছে। সংসদ সদস্যরা কণ্ঠভোটে বিলটি পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পর লবিতে রাখা ব্যালটে স্বাক্ষরের মাধ্যমেও ভোট দেবেন। সংসদ সচিবালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, হাজী মো. সেলিম, তাহজীব আলম সিদ্দিকী বিলের ওপর কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।এদের বেশিরভাগই বিচারপতি অপসারণের সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগের বিধিমালা প্রস্তাবিত আইনে যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। একই কথা বলে আসছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক বিভিন্ন আইনজীবীও। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের সরানোর ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর পর এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে যায়।
চতুর্থ সংশোধনী বাতিল হলে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।এখন আবার আইন প্রণেতাদের হাতে বিচারকদের সরানোর ক্ষমতা ফিরছে। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি অভিযোগ করছে, আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগের ওপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান সংশোধনের এ উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সরকার এ অভিযোগ নাকচ করে বলছে, রাষ্ট্রের সব অঙ্গের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করতেই ১৯৭২-এর সংবিধানের বিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংবিধানের এই সংশোধনের পর বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাদের সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে একটি আইন প্রণয়ন করবে সরকার। বিলটি পাসের ৯০ দিনের মধ্যে আইনে পরিণত হবে ষোড়শ সংশোধনী। এমন কথাই জানিয়েছন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।