রেললাইনের দুই ধার নিরাপদ রাখতে কাজ করছে টহল পুলিশ
মোঃ জাফর ইকবাল, ঢাকা: রাজধানীতে রেললাইনের দুই ধার নিরাপদ রাখতে টহল পুলিশ কাজ করছে। কেউ যাতে কোনোভাবে দোকানপাট বসাতে না পারে, সকালে ও বিকেলে রেললাইনের ওপর বাজার যাতে বসতে না পারে, সেজন্য রেলের নিরাপত্তাবাহিনী কেউ পোশাকে কেউ আবার সিভিল ড্রেসে রেললাইন এলাকায় কাজ করছেন।
সম্প্রতি রেলের দুই ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর রেললাইন এলাকায় এ চিত্র দেখা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরো কমপক্ষে পাঁচ জন। নিহতদের পরিবারের লোকজন দাবি করেন, অবৈধভাবে রেললাইনের ওপর বাজার বসায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া রেললাইনের পাশে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সরে যেতে না পেরে অনেকে কাটা পড়েছেন। দুর্ঘটনার পরদিন শুক্রবার থেকেই কারওয়ান বাজার রেল ক্রসিং এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। চলবে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পঞ্চম দিনে গিয়ে কারওয়ান বাজার রেল ক্রসিং এলাকায় দেখা যায়, সেখানে কোনো দোকানপাট নতুন করে বসেনি। আশেপাশে কেউ নতুন করে স্থায়ী দোকান, ঝুপড়ি কিংবা থাকার ঘর তৈরি করেনি। সেখানে পাহাড়া দিচ্ছে রেলওয়ে পুলিশের টহল টিম।কারওয়ান বাজার রেল ক্রসিংয়ের সিগন্যালম্যান আব্দুল বাতেন বলেন, ‘এখানে কোনো দোকানাপাট বসেনি। কেউ যাতে এ ধরনের কোনো দোকানপাট অথবা বসতি গড়তে না পারে, সেজন্য সাদা পোশাকে ও বাহিনীর পোশাকে রেল পুলিশ কাজ করছে। তারা টহল দিচ্ছে। কেউ দোকান বসালে সোজা তাদের ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।’
কিছুদূর এগিয়ে মগবাজার রেলক্রসিং এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়। সেখানে কোনো দোকানপাট এমনকি হকার পর্যন্ত বসতে পারেনি। রেললাইনের ওপর দিয়ে হাঁটা-চলাও নেই তেমন একটা। একই চিত্র মালিবাগ রেলক্রসিং ও খিলগাঁও রেলক্রসিংয়ে দেখা গেছে। মালিবাগ রেলক্রসিংয়ের পাশে পানের দোকানদার দিদার এইদেশ এইসময়কে বলেন, ‘ওই দেখেন, রেলের দুই পাশে সিমেন্টের খুঁটি গেড়ে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের দেয়াল থাকলেও কেউ সহজে রেললাইনের ওপর দোকানপাট বসাতে সাহস পেত না। তবে সব জায়গাতে এ দেয়াল চলবে না। কারওয়ান বাজার ও খিলগাঁও এলাকায় স্থায়ী দেয়াল উঠাতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে কমলাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মজিদ বলেন, ‘পঞ্চম দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান নাখালপাড়া এলাকায় চলছে। রেললাইনের দুধারে কমপক্ষে ১০ ফুট জায়গা খালি রাখা হবে। এর মধ্যে যারা বসতঘর করেছে, দোকানপাট বসিয়েছে, ঝুপড়ি করে দোকান করছে, তাদের বুলডুজার দিয়ে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তবে ১০ ফুটের বাইরে যে বস্তিগুলো রয়েছে সেগুলো ভাঙ্গা হয়নি। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। কুরবানির ঈদের কারণে কয়েক দিন বন্ধ থাকবে। এরপর আবার অভিযান শুরু হবে।’