মঙ্গলের কক্ষপথ ছোঁয়ার পরের দিনই ‘মার্স কালার ক্যামেরা’ ব্যবহার করে লাল গ্রহের প্রথম ছবি পাঠাল ভারতের মঙ্গলযান। লাল মাটির অপূর্ব ছবি পোস্ট করা হয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো)’র অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে।
ইসরো জানায়, কয়েকটি ছবি পাঠিয়েছে মঙ্গলযান। ৭ হাজার ৩শ’ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে ছবিগুলো তোলা। ছবিতে কমলা রঙের জমিনে সাদা গর্ত দেখা গেছে।
মঙ্গলযান পুরোপুরি স্থানীয়ভাবে তৈরি। মহাকাশযানটি তৈরিতে সময় লেগেছে ১৫ মাস। খরচও পড়েছে অত্যন্ত কম। এই অভিযানে মোট খরচ হয়েছে ৪শ’ ৫০ কোটি রুপি।
ভারতের মঙ্গলযান উৎক্ষেপণের একবছরেরও কম সময়ের মধ্যে বুধবার সকালে মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। প্রথমবারের চেষ্টাতেই মঙ্গলের মাটিতে পা দিয়ে রেকর্ড গড়ে ভারতের মহাশূন্য গবেষণা সংস্থার (ইসরো) এই মঙ্গল যান। দেশবাসীকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে শুভেচ্ছা জানান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।খবর এএফপির।
মঙ্গলে এ পর্যন্ত ৫১ বার অভিযান হয়েছে । এর মধ্যে ২১ বার অভিযান সফল হয়েছে। আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মঙ্গলে সফল অভিযান করতে পেরেছে। তবে প্রথমবারই কেউ সফল হয়নি। এক্ষেত্রে সফল দেশ একমাত্র ভারত।
গত বছরের ৫ নভেম্বর ব্যাঙ্গালোরের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পিএসএলভি-সি ২৫ রকেটে চেপে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি জমায় মঙ্গলযান। এর পরে বেশ কিছু দিন পৃথিবীর চার পাশে পাক খেতে খেতে নিজের গতি বাড়াতে থাকে এ মহাশূন্য যান। সবশেষে ১ ডিসেম্বর লালগ্রহের দিকে ছুটতে শুরু করে এটি। দশ মাস ধরে প্রায় ৬৬ কোটি ৬০ লাখ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলের কাছাকাছি পৌঁছে যায় মঙ্গলযান।
তারপর আশা আর আশঙ্কার দোলাচলে প্রতিটা মুহূর্ত কাটে ইসরোর বিজ্ঞানীদের। অবশেষে বুধবার সকালে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মঙ্গলের চার পাশে নির্দিষ্ট কক্ষে প্রবেশ মঙ্গলযান। ইতিহাসে নাম উঠে ইসরোর।
এর আগে জাপানের মঙ্গল অভিযান ১৯৯৮ সালে ব্যর্থ হয়েছিল। রাশিয়ান রকেটের জেরে ২০১১ সালে সাফল্যের খুব কাছে গিয়েও শেষ পর্যন্ত আশা পূরণ হয়নি চীনের।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০১১ সাল থেকে মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি নিলেও এখনও তা বাস্তবের মুখ দেখেনি।
ভারতের মঙ্গলযানের লক্ষ্য লাল গ্রহে মিথেনের উপস্থিতি খোঁজ করা। পাশাপাশি পৃথিবীর মত এই গ্রহে কোনদিন প্রাণের উপস্থিতি ছিল কী না তা নিয়েও কাজ চালাবে এই মহাকাশ যান।
|