সারাদেশে উৎসব মুখর পরিবেশে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত ॥ মৎস্য প্রতিমন্ত্রী ও হুইপের মন্ডপ পরিদর্শন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষেরা আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গা পূজার মহা অষ্টমীতে কুমারী পূজায় সামিল হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাসস প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাগণ জানান, ৭ বা ৮ বছরের কন্যা শিশুকে পূজার আসনে বসিয়ে শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তবস্তুতির মাধ্যমে মহা ধুমধামে হিন্দু পূন্যার্থীরা এ পূজা পালন করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজারী ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ বিভিন্ন মিশনে গিয়ে কুমারী পূজা দর্শনে অংশ নেয়। এতে শারদীয় দুর্গা উৎসব পরিণত হয় সার্বজনীন উৎসবে।
যশোর সংবাদদাতা জানান, উৎসব মুখর পরিবেশে শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার কুমারী ছিলেন সাত বছরের মিথি গাঙ্গুলী। বেলা ১১টায় রামকৃষ্ণ মিশন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন মন্দিরে মহাষ্টমীর পূজা ছাড়াও অঞ্জলী প্রদান, সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, স্বামী বিবেকানন্দ শারদীয় দূর্গোৎসবের মহা অষ্টমীতে এ পূজার প্রচলন করেন।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, শারদীয় দূর্গাপুজার মহা অষ্টমীতে আজ সকাল ১০টা ১ মিনিটে জেলার রামকৃষ্ণ মিশনে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। এ বছর কুমারী নির্বাচন করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিনগর উপজেলার নিতেশ আচার্য্যরে ৮ বছর বয়সী কন্যা অনামিকা আচার্য্যকে। সে স্থানীয় ফান্দাউক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
পূজার পূর্বে সকালে তাকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। হাতে ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক আর পায়ে আলতা দেয়া হয়। সেই সঙ্গে চারদিক মুখরিত হয় শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তবস্তুতিতে। এ সময় কুমারী পূজা দেখতে হবিগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার পূণ্যার্থীরা রামকৃষ্ণ মিশনে ভিড় জমায়।
প্রখর রোদ উপেক্ষা করে প্রতি বছরের মতো এবারও পূজা দেখতে সিলেট, বি,বাড়িয়া, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনাথী আসেন। সকাল থেকেই রামকৃষ্ণ মিশনের আশেপাশে দর্শনার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পুরো রামকৃষ্ণ মিশন ও এর আশপাশের এলাকা। দর্শনার্থীদের অনেকে মিশনের আশেপাশের বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে কুমারী মাতার দর্শন লাভের চেষ্টা করেন।
উল্লেখ্য, কূমারী পূজায় নিরাপত্তার স্বার্থে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসন ২০ নারী পুলিশসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য রামকৃষ্ণ মিশন রোড এলাকায় মোতায়েন করে।
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সার্বজনীন দূর্গাপূজার অষ্টমীতে সকালে স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার আড়াইহাজার উপজেলার নারায়ন ভট্টাচার্যের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রী নবনীতা ভট্টাচার্য নন্দিতাকে কুমারী হিসেবে পূজা দেয়া হয়। সকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ভক্ত রামকৃষ্ণ মিশনে একত্রিত হয়ে কুমারী পূজায় অংশ নেয়। এ সময় তারা কুমারীর প্রতি অঞ্জলি প্রদান করে। সকাল সাড়ে দশটায় লগ্ন অনুযায়ী কুমারী পূজা শুরু হয়ে সাড়ে এগারটায় পূজা শেষ হয়। রামকৃষ্ণ মিশনের একতানন্দ মহারাজ কুমারী পূজা পরিচালনা করেন। নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান কুমারী পূজায় আগত হিন্দু ধর্মালম্বীদের শুভেচ্ছা জানান। রামকৃষ্ণ মিশন ছাড়াও এবার শহরের নিতাইগঞ্জের বলদেব আখড়ায় পৃথকভাবে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই উৎসব আমেজে চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য জেলায়ও কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
একই উৎসব আমেজে চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য জেলায়ও কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি জেলার বিভিন্ন দূর্গাপূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। এ সময় হুইপ বলেন, সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠান স্বাধীনভাবে পালন করবে এ জন্য সরকার সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। যদি কোন দূস্কৃতিকারী ধর্মীয় উৎসব পালনে বাঁধা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজ দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদর উপজেলার প্রায় ৫০টি দূর্গাপূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে হুইপ আরো বলেন, এবার দেশে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দূর্গাপূজা এবং মুসলমানদের পবিত্র ঈদ-উল-আযহা একই সাথে উৎযাপন হচ্ছে। দু’টি ধর্মীয় অনুষ্ঠানই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে।