‘সরকার নয়, বেকায়দায় পড়েছেন লতিফ সিদ্দিকী’
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বেকায়দায় পড়েছে বলে আমি মনে করি না। উনি (লতিফ সিদ্দিকী) নিজেই বিপদে পড়েছেন। উনি যা বলেছেন এজন্য উনাকেই খেসারত দিতে হবে। উনি বেকায়দায় পড়েছেন।শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের ব্যাপারে তিনি যখনই জানতে পেরেছেন, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি।প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কে কি বলল না বলল তা বড় কথা নয়, আমার জনগণের ওপর ভরসা আছে। সাধারণ মানুষ ভুল করেন না…, তারা আমার মূল ভরসার জায়গা। আওয়ামী লীগ ও সরকার বিপদে নেই। উনি (লতিফ সিদ্দিকী) নিজেই বিপদে আছেন।
তিনি আরো বলেন, যেটা আমি বলেছি সেটা করবো। তাকে মন্ত্রিসভায় রাখব না। সে থাকবে না।
‘কবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে’ এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি নির্দেশ দিলে রিজাইন (পদত্যাগ) করতে হবে। নইলে বিদায় করে দিতে হবে। কিন্তু বিদায় দিতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হজে গেছেন। তারপরও আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ফাইল তৈরি করে রাখতে বলেছি, তারা ফাইল তৈরিও করেছে।দল থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাদ দিতে হলে তা নিয়ে দলে আলোচনা করতে হবে। অভিযোগ তুলে ধরে আলোচনা করতে হবে। ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’গত ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকীর ওই বক্তব্য নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই সমালোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অন্তত দুই ডজন মামলা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে।এমনকি বিএনপি এবং কয়েকটি ইসলামি সংগঠন ওই বক্তব্যের কারণে লতিফকে গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছে।
নিউ ইয়র্কে প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই। কোনো প্রোডাকশন নাই, শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে।’
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দেয়ার অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন কর্মসূচির কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। পরে সাংবদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।এ সময় সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রমুখ।