অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ল হুদহুদ
কোলকাতা প্রতিনিধি : অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ। বিশাখাপত্তমে ভেঙে পড়ল র্যাডার।
দিল্লীর আবহাওয়া দফতর জানায়, ঘণ্টায় ১৭২ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগের ঝড়ে অনেকটা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বিশাখাপত্তমের উপকূলীয় এলাকা। আগামী ৬ ঘণ্টায় এ ঝড়ের তীব্রতা ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর উপকূলের চারটি জেলা ও দক্ষিণ ওড়িশার আটটি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। হুদহুদের তাণ্ডবে ইতোমধ্যেই বিশাখাপত্তমে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর আরো জানায়, এই জেলাগুলোতে ঝড়ের গতিবেগ ধীরে ধীরে কমলেও ১৫ তারিখ পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হবে।এদিকে, হুদহুদের প্রভাবে গতকাল থেকেই বিশাখাপত্তম ও গোপালপুর এলাকায় উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ভারী বৃষ্টি। হুদহুদের জেরে উপকূল অঞ্চলে চব্বিশ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী তেরোটি জেলায়। ইতোমধ্যেই কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠ জানিয়েছেন, দূর্গত মানুষদের ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আপদকালীন সমস্ত ব্যবস্থার পাশাপাশি, রাজ্যগুলোকেও সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় হুদহুদের পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলেও। এর প্রভাবে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা উপকূলে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। হুদহুদের জন্য উপকূল অঞ্চলে ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ রাজ্যের উপকূলে ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটারের বেশি হবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। গোটা কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।
পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোতেও। সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে মাতলা নদীর বাঁধ ভেঙে ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে বোকরাবনি, পেটুয়া, নয়াগ্রাম, সন্দেশখালিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। ঘরছাড়া হয়েছেন প্রায় দু’হাজার মানুষ।
হুদহুদ মোকাবিলায় বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে রাজ্য সরকার। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিশেষ এই কন্ট্রোল রুম। ইতোমধ্যেই একটি বিপর্যয় মোকাবিলা টিম পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। আরও একটি টিমকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মত্স্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রচুর পরিমান ত্রিপল ও ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর একাংশ ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। কলকাতা পুরসভার পাম্পিং বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।