খাগড়াগড় জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর !
কলকাতা প্রতিনিধি : যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ার কারণেই নিজেদের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে বর্ধমানের খাগড়াগড়কে বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা।
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে জেলাটি ‘জঙ্গিমুক্ত এলাকা’ হিসেবে পরিচিত হলেও খাগড়াগড় বিস্ফোরণ তাতে কালিমা লেপন করে। অভিযুক্তদের জেরার বয়ানে উঠে আসে বর্ধমানকে প্রাধান্য দেওয়ার, জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর বানানোর বেশ কিছু কারন।
গোয়েন্দা সুত্রে জানা যায়, বর্ধমানের সঙ্গে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় এবং জেলাটিতে তেমন কোন হাঙ্গামা না থাকায় এ জেলাকেই নিরাপদ ভূমি হিসেবে বেছে নেয় জঙ্গিরা। এখান থেকে দুটি করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ এবং একইসঙ্গে বাস ও রেল যোগাযোগ সুবিধার জন্যও এ জেলা জঙ্গিদের পছন্দের তালিকায় থাকার অন্যতম কারণ।
পাশাপাশি, শান্ত নিরিবিলি শহর হওয়ায় এখান থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হত বলেও জেরার জবাবে জানায় আটক জঙ্গিরা।
জানা যায়, বিভিন্ন পরিচয়ে এসব জঙ্গি এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মাধ্যমে মালিকবিহীন বাসা ভাড়া নিত। তারা আশপাশের কারো সঙ্গে মেলামেশা না করে মূলত: ব্যবসার ছলেই চুপচাপ বসবাস করত।
তবে জেরার জবাবে জঙ্গিরা বর্ধমানকে প্রাধান্য দিলেও, পাশের জেলা নদীয়াকে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা বিভাগসূত্রে জানা যায়, জঙ্গিরা বর্ধমান থেকে মঙ্গলকোট হয়ে নদীয়ার করিমপুর যেত এবং সেখান থেকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা হয়ে বাংলাদেশে যাতায়াত করত। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের বাড়িটি থেকে পাওয়া ৩৩ পাতার একটি ‘ব্লু প্রিন্টে’ বিভিন্ন ধরণের আধুনিক রকেট লাঞ্চার তৈরির ডায়াগ্রাম আঁকা রয়েছে বলে জানায় ওই সূত্র। এ ছাড়াও সেখান থেকে ৯০ পাতার আরো একটি বুকলেট উদ্ধার করা হয়- যাতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিভিন্ন তথ্য রয়েছে বলে জানায় গোয়েন্দারা। এর পেছনে আন্তর্জাতিক কোন জঙ্গি গোষ্ঠীর মদদ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা সূত্রগুলো।