গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া ঢুকিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন!
ডেস্ক রিপোর্টঃ এক পাষন্ড স্বামী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। রোববার দিবাগতরাতে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী গ্রামে পাষন্ড সেই স্বামী তার স্ত্রীর উপর বর্বরোচিত ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনার পর আজ সোমবার ভোরে গ্রামের প্রতিবেশীরা নির্যাতিত গৃহবধূকে উদ্ধার করে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানের তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাঁকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করেন। এদিকে এ ঘটনার পর পরই পালিয়ে গেছে পাষণ্ড স্বামী মাইদুল।
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতিত গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ‘রোববার গভীররাতে সহবাসের পর আমার স্বামী ওই স্থানে কৌশলে মরিচের গুঁড়া ঢুকিয়ে দেয়। এ যন্ত্রণায় আমি ছটফট ও চিৎকার করলেও আমাকে ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। বন্ধ ঘরের দরজা খুলে না দেওয়ায় প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকতে পারেনি। আমার শশুর-শ্বাশুড়িও এগিয়ে আসেনি, উল্টা প্রতিবেশীদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সোমবার ভোরে গ্রামের মানুষ জড়ো হলে আমার স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসী আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার মা-বাবাকে খবর দেয়।’
বালিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ ও আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা রাতে চিৎরের খবর পাই। কিন্তু রাতে আমাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নি তারা। সকালে গ্রামের মানুষ জড়ো হলে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে জানতে পারি মরিচের গুঁড়া দেওয়ার অমানুষিক নির্যাতনের কথা। গ্রামবাসী আরো জানায়, বিয়ের পর থেকে মেয়েটির ওপর নির্যাতন শুরু হয়। প্রায় রাতেই মেয়েটির আর্তচিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে পাষণ্ড স্বামী মাইদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে কিছুই করি নাই। ও ডংডাং (তালবাহানা) শুরু করছে। কি জন্য যে করে ওই ভালো বলতে পারবে।’ কিছু না করলে হাসপাতালে যাবে কেন? প্রতিবেশীরা কেন বলবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওটা তারা বলতে পারবে।’ এ সময় তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপাকে আমার মোবাইল নম্বরটা দিয়েছে কে?’
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মইনুল হাসান চিশতী জানান, মরিচের গুঁড়া দেওয়ার কারণে মেয়েটির ওই স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ বছর আগে উপজেলার বালিয়ামারী গ্রামের হাফেজ উদ্দিনের পুত্র মাইদুল ইসলামের সঙ্গে একই উপজেলার আব্দুল মতির কন্যা সরজিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই মাস পর থেকেই যৌতুকের জন্য কারণে-অকারণে মেয়েটির ওপর নির্যাতন শুরু হয়। মেয়েটি বাড়িতে দর্জির কাজ করে যা আয় করতো সব টাকা স্বামী মাইদুল ইসলাম নেশায় খরচ করত। এ নিয়ে গ্রাম্যভাবে ছেলের বিরুদ্ধে একাধিকবার শালিসী বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু সরজিনাকে নির্যাতন করা বন্ধ হয়নি। এলাকায় অভিযোগ আছে ছেলেটি গাঁজাখোর।