ঈদের পর ছাঁটাইয়ের শিকার ২ লাখ পোশাকশ্রমিক!
অর্থনৈতিক প্রতিবেদকঃ ঈদের ছুটির এক বা দুইদিন পরে কর্মস্থলে কাজের উদ্দেশ্যে এলেও যোগদান করতে পারেননি এমন শ্রমিকের সংখ্যা সারাদেশে প্রায় দুইলাখ। আর ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ নিচ্ছে নানা ছলচাতুরি ও অপকৌশল। সেইসব শ্রমিককেই টার্গেট করে ছাঁটাই করা হয়েছে যারা বিভিন্ন সময়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে থাকেন বা শ্রমিক অধিকার আদায়ে আন্দোলনে অংশ নিয়ে থাকেন।টেক্সটাইল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বলেন, আমাদের কাছে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গার্মেন্টের ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা এসে অভিযোগ করছেন। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঈদের পর এসে তারা দেখছেন তাদের বিনা নোটিশেই ছাঁটাই করা হয়েছে।
গার্মেন্টগুলোতে খবর নিয়ে দেখেছি ঘটনার সত্যতা রয়েছে। পরে আসার কারণে সব শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে তা যদিও নয়। যেসব শ্রমিক মালিকদের অন্যায়ের বিষয়ে কথা বলতেন কেবল তাদেরই ছাঁটাই করা হয়েছে। এসব বিষয়ে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তপন সাহা।
ছাঁটাইয়ের সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সংগঠন (বিজিএমইএ) এর সহ-সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজীম বলেন, ছুটির পর গার্মেণ্ট খোলার পর যদি কোনো শ্রমিক না আসে সে জায়গাতো খালি রাখা যাবে না। উৎপাদন তো আর বন্ধ রাখা সম্ভব না। এখন সেজন্য ছাঁটাই করা হয়ে থাকতে পারে। তবে সেই সংখ্যা লক্ষাধিক হতে পারে না। আর এ ধরনের কোনো অভিযোগও আমাদের কাছে আসেনি।
কিন্তু এভাবে কোনো নোটিশ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়ে থাকলে তাতে শ্রম আইনের ২০ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায় বলে জানিয়েছেন শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ।
তিনি বলেন, শ্রম আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী কোনো শ্রমিককে নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণেই কেবল ছাঁটাই করা যেতে পারে। যেমন, একটি কারণ হতে পারে কারখানায় যথেষ্ট পরিমাণ কাজ না থাকা। কিন্তু ছাঁটাইয়ের অন্তত এক মাস আগে তো নোটিশ দেবার নিয়ম। সেই নোটিশ লেবার ইন্সপেক্টর জেনারেলের কাছে পাঠাতে হবে এবং ছাঁটাই করা শ্রমিক সেক্ষেত্রে এক মাসের বেসিক ও যতো বছর কাজ করেছেন তার প্রতি বছরের জন্য এক মাসের বেসিক করে বেনিফিট পাবেন।
নোটিশ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই করা হলে সেই শ্রমিক টার্মিনেশন বেনিফিটের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন বলে জানান জাফরুল হাসান শরীফ।
তিনি বলেন, নোটিশ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই করা হলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক টার্মিনেশন বেনিফিটের জন্য আদালতের শরণ নিতে পারেন। আইন অনুযায়ী মালিকপক্ষ সব প্রাপ্য দিতে বাধ্য।