আমাকে বোমা মারুন এ অত্যাচার আর সহ্য হয় না
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ দুটো গল্প যেন কিছুতেই মিলছে না। একটা আনন্দ-আখ্যান। যেখানে শুধুমাত্র ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আদর্শের টানে অস্ট্রিয়ার বাড়ি ছেড়ে সিরিয়ায় চলে আসে দুই কিশোরী। সুখে-শান্তি সংসার পাতে। অন্যটাও আইএস রাজত্বেরই গল্প। তবে এই গল্পটা ইরাকের এক তরুণীর। যিনি কাতর গলায় মানবাধিকার কর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন, ‘দোহাই আপনাদের। আমাকে বোমা মারুন। আপনারা হত্যা না করলে আমি নিজেকে হত্যা করবো। এ অত্যাচার আর সহ্য হয় না।’
দিন-রাত আইএস জঙ্গিদের কাছে ধর্ষিত হতে হতে বাঁচার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেছেন ওই তরুণী। এখন তাই মৃত্যুতেই মুক্তি খুঁজছেন।
প্রথম দুই কিশোরীর নাম সাবিনা সেলিমোভিক ও সামরা কেসিনোভিক। বয়স ১৫। ভিয়েনার বাসিন্দা সাবিনা ও সামরা গত এপ্রিল থেকে নিখোঁজ। কেন, কোথায়, কী ভাবে তারা হারিয়ে যায় তা নিয়ে এত দিন কোনও তথ্যই ছিল না। সম্প্রতি এক সাপ্তাহিক ফরাসি পত্রিকাকে এসএমএস করে সাবিনা জানায় তাদের গল্প। কী ভাবে প্রথমে তুরস্ক ও তার পর পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় ঢোকে তারা, কী ভাবেই বা রাকায় পৌঁছায় আর তার পর কী ভাবে দুই জঙ্গিকে বিয়ে করে।
গল্পটা রোমহর্ষক। তবে তার থেকেও বেশি বিস্ময়ের। আইএস রাজত্বে নাকি ভাল আছে সাবিনা ও সামরা। কোনও কষ্ট হচ্ছে না তাদের।
সাবিনা বলেন, ‘আমরা ভাল আছি। এখানে এসেছিলাম নিজেকে সমর্পন করতে। সেটাই করছি। সিরিয়ায় খাওয়া-দাওয়া ও থাকার অসুবিধা নেই। কারণ, অস্ট্রিয়ার বাজারের মতো কর্নফ্লেক্স, কেচআপ থেকে শুরু করে সব কিছুই মেলে এ দেশে। সব মিলিয়ে তাই সুখে-শান্তিতেই চলছে সংসার। ঠিক যেমনটা চলার কথা।’
কিন্তু এই দুই তরুণী সুখে থাকলে আরেক তরুণী কেনো মৃত্যু খুঁজছে। কারণটা খুব সহজ। ওই তরুণী ধর্মে ইয়েজিদি। কিছু দিন আগে ওই গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছিল আইএস। তরুণীকে প্রাণে মারেনি তারা, তবে যৌন দাসী করে রেখেছেন। যখন যার ইচ্ছে, তখনই সে চড়াও হয়েছে তাঁর উপর।
যৌনদাসী ইয়াজিদি ওই তরুণী বলেন, ‘একদিনে ৩০ বারেরও বেশি ধর্ষিতা হয়েছি। দুপুরে খাওয়ার সময় পাই নেই। এমনকি শৌচালয়ে যাওয়ার সময় নেই। শুধু…।’
আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দয়া করে মার্কিন বিমানগুলোকে বলুন যৌনকর্মীদের ওই আস্তানাটি খুঁজে বের করে বোমা মারতে।’
আইএস যে কয়েকশ’ ইয়াজিদি নারী ও শিশুদের যৌন-ক্রীতদাসে পরিণত করেছে, সে খবর আগেই জানা গিয়েছে।