বাণিজ্য উদারীকরণে বাংলাদেশ দ্বিতীয়স্থানে
অর্থনৈতিক প্রতিবেদকঃ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক পিউ রিসার্স সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাণিজ্য উদারীকরণে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে।
আর দক্ষিণ এশিয়ায় এক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষে। বিশ্বের ৪৪টি দেশের উপর সমপ্রতি চালানো এক গবেষণার এই তথ্য প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিন। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশ মুক্ত বাজার ও বাণিজ্যের জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে এগিয়ে এসেছে। ফলে জরিপে অংশ নেয়া ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করে, বাংলাদেশ বানিজ্য বিনিয়োগ উদারীকরণের জন্য সহায়ক। সেজন্য বাংলাদেশ এখন পুঁজিপতিদের স্বর্গরাজ্য
গবেষণা অনুযায়ী, বাণিজ্য উদারীকরণের জন্য ভিয়েতনাম শীর্ষস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের পর অন্য তিনটি দেশ হলো দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও আফ্রিকার দেশ ঘানা।
বাণিজ্য উদারীকরণের উদাহরণ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানি খাতের অগ্রগতিকে সামনে আনা হয়। এতে বলা হয়, গত দুই দশকে রপ্তানি বাণিজ্য বিশেষত গার্মেন্টস রপ্তানি দেশের অর্থনীতিকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়েছে। এই খাতে নিরাপত্তার ত্রুটি ও শ্রম অধিকার নিয়ে অনেক কথা থাকলেও গার্মেন্টস এখন দেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় চালিকাশক্তি। গার্মেন্টস রপ্তানিতে এখন চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ হলেও বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা যায়, শীর্ষে থাকা ভিয়েতনামের ৯৫ শতাংশ জনগণ বাণিজ্য উদারীকরণের পক্ষে। বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে ৮০ শতাংশ। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭৮ শতাংশ, চীনে ৭৬ শতাংশ এবং ঘানায় ৭৫ শতাংশ মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উদারীকরণের পক্ষে বাংলাদেশের পরে রয়েছে যথাক্রমে ভারত ও পাকিস্তানের নাম।
পিউ রিসার্স সেন্টার চলতি মাসের শুরুর দিকে ৪৪টি দেশের উপর এই জরিপকাজটি চালায়। এর আগেও এ ধরণের একটি জরিপ কাজ চালায় প্রতিষ্ঠানটি। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বাণিজ্যের সুবিধা বা অসুবিধা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এছাড়া মুক্ত বাজারের মাধ্যমে বৈষম্য, আশা বা হতাশার মত বিষয়গুলো নিয়েও জানতে চাওয়া হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাণিজ্য ও বিদেশী বিনিয়োগ উদারীকরণের বিভিন্ন বিষয়েরও বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে। তারা মনে করে বাণিজ্য বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে। সেই সঙ্গে মজুরি বাড়বে। এ জন্য বিদেশী বিনিয়োগের পক্ষেও তারা ইতিবাচক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরে ভারতের অবস্থান (৭২ শতাংশ)। এর পর রয়েছে পাকিস্তান (৬২ শতাংশ)। বাণিজ্য বৃদ্ধিকে কীভাবে দেখেন? – এমন প্রশ্নে জরিপে অংশ নেয়া ৯১ শতাংশ মানুষ মনে করেন এটি খুবই ভালো। ভারতে এই হার ৭৮ শতাংশ। অন্যদিকে বেশিরভাগ ভারতীয় মনে করেন দেশেই ভালো জীবনযাপন করা সম্ভব। এই প্রশ্নে ভারতের পরে বাংলাদেশের অবস্থান।