‘মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর কলঙ্কিত দিনঃ প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চক্রান্তকারী ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই। তারা দেশের গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে বারবার হামলা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’
রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ মন্তব্য করেন
।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নয়নকে সমুন্নত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর একটি কলঙ্কিত দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তার ঘনিষ্ঠ সহচর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।’
তিনি আরো বলেন, ‘কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা। এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।’
পঁচাত্তরের সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতারা পরবর্তী ২১ বছর দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠী কখনো সামরিক লেবাসে, কখনো গণতন্ত্রের মুখোশ পরে অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা ধরে রাখে। আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার বদলে পুরস্কৃত করে। খুনিদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনে। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করা হয়েছে। জেলহত্যা মামলা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ চলছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলার রায় দেওয়া হয়েছে।
বাণীতে জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।