নিজস্ব মুদ্র ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দিলো আইএস
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ পতাকা, আদালত, মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট, গাড়ির লাইসেন্স প্লেট ইত্যাদি প্রশাসনিক বন্দোবস্ত আগে থেকেই চালু করেছিল ইসলামিক স্টেট। এবার সেই কাঠামোয় যুক্ত হলো মুদ্র ব্যবস্থা।খিলাফত প্রতিষ্ঠার পরবর্তী ধাপ হিসেবে ইসলামিক স্টেট মুদ্রা ব্যবস্থার সংস্কার এবং নিজস্ব মুদ্রা বাজারে আনছে। প্রায় ১৩০০ বছর আগে খিলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য আলাদা মুদ্রা ব্যবস্থা তৈরির কথা ছিল। সেই পূর্বোক্ত পরিকল্পনাটিকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছে ইসলামিক স্টেট।তবে ইসলামিক স্টেট প্রবর্তিত এই মুদ্রা ব্যবস্থা বর্তমানে প্রচলিত মুদ্রা ব্যবস্থা থেকে ভিন্ন। প্রথম ইসলামিক স্টেট তাদের মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহার করছে না কোনো পার্চমেন্ট কাগজ। কাগজের পরিবর্তে তারা সাবেক আমলের ব্যবস্থা অনুযায়ী স্বর্ণ, রৌপ্য এবং তামায় নির্মিত মুদ্রা চালু করবে। যাকে তারা দিনার নামে বাজারে চালু করতে চাইছে।
তবে বিশ্বের মুদ্রা সম্পর্কিত ঐতিহাসিক এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ইসলামিক স্টেটের পক্ষে স্বতন্ত্র মুদ্রা এবং মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে না। কারণ সহস্র বছরের পুরনো পন্থায় ধাতুর মুদ্রা চালু করতে গেলে প্রথমত ইসলামিক স্টেট সংগঠনটিকে অর্থের তারল্য সঙ্কট মোকাবেলা করতে হবে।
যেহেতু বিশ্বে এখন কোনো খিলাফত রাষ্ট্র কাঠামো নেই তাই তাদের পক্ষে অর্থের তারল্য মান স্থির রাখতে স্বর্ণের আমদানি করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা ইসলামিক স্টেটের এই স্বতন্ত্র মুদ্রার প্রচলনকে একটা নতুন প্রোপাগা বলে অভিহিত করছেন।
কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞ আবার ভিন্ন কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, ইসলামিক স্টেট যদি ধাতু নির্মিত মুদ্রা ব্যবস্থা সত্যিই চালু করতে চায় তাহলে তারা সবার আগে তেল বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ ডলারে না নিয়ে স্বর্ণে নিতে চাইবে। আর যেহেতু ইসলামিক স্টেটের কাছ থেকে তেল পশ্চিমা দেশগুলোই কেনে তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইসলামিক স্টেটকে স্বর্ণে তেলের দাম শোধ করতে হতে পারে তাদের। আর এই বাধ্যবাধকতার মধ্যিখানে এমনও হতে পারে যে বিশ্বব্যাংক এই ইসলামিক স্টেট দিনারকে স্বীকৃতিও দিতে পারে।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) নেতারা বৃহস্পতিবার তাদের নিজস্ব মুদ্রার ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষণায় বলা হয়েছে, মুদ্রাগুলোর ওজন ও মূল্যমান পরবর্তীতে নিশ্চিত করা হবে। আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এসব মুদ্রা দিয়ে যে কেউ কেনাবেচা করতে পারবেন। তবে ঠিক কবে থেকে এই মুদ্রা বাজারে ছাড়া হবে সে ব্যাপারে আইএস নেতারা স্পষ্ট কোনো ঘোষণা দেননি।