গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ‘কোনো সুযোগ নেই!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জানুয়ারি আসার আগেই বিদ্যুতের দাম বাড়া/কমা নিয়ে চারদিকে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষও ধারণা করছেন -সামনের বছরের শুরুতে বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম। তবে বিইআরসি আইন অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি থেকে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ‘কোনো সুযোগ নেই’ বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশনের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, জানুয়ারি থেকে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে বিইআরসি নিজেই আইন লঙ্ঘন করবে।
অন্যদিকে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এবং দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসেবে বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গড়ে খরচ হচ্ছে ৬ টাকা ৫৪ পয়সা। চারটি বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি, ডেসকো আরইবি এবং ওজোপাডিকোর কাছে পিডিবি এ বিদ্যুৎ বিক্রি করছে ৪ টাকা ৭০ পয়সা দরে।আর বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে সেই বিদ্যুৎ গড়ে ৬ টাকা ১৫ পয়সা দরে সাধারণ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছে। সম্প্রতি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে ১৮শতাংশের ওপরে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো আবেদন করেছে পিডিবি।
কমিশন বলছে জানুয়ারি থেকে পাইকারি দাম বাড়ানো হলে গ্রাহক পর্যায়ে খুচরা বিদ্যুতের দামও বাড়বে। তবে ভোক্তা সংগঠন ক্যাব বলছে বিইআরসি আইন অনুসারেই জানুয়ারি থেকে বাড়ানোর সুযোগ নেই।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, ‘যে সকল বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে দাম বাড়ানো হয়েছিল তার সবগুলো বিশ্লেষণ করলে আর নতুন করে দাম বাড়ানোর কোন সুযোগ বর্তমানে নেই।’
এদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বর্তমান খরচ ৬ টাকা ৫৪ পয়সা কেন হবে এমন প্রশ্ন তুলেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। কারণ বর্তমানে মোট বিদ্যুতের প্রায় ২৫ শতাংশই উৎপাদন হচ্ছে তরল জ্বালানী ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল দিয়ে।
আর গত কয়েক মাসে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ৩০ ডলারের বেশি কমেছে।
জানতে চাইলে অধ্যাপক ম তামিম বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ আরো কমবে।’
চলতি বছর মার্চ মাসে সর্বশেষ গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। বর্তমান দরে গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে ১২টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং ডিপিডিসি ও ডেসকো মুনাফা করছে।
এখন পিডিবির পাইকারি দামের সাথে জানুয়ারি মাস থেকে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়াতেও আবেদন করা শুরু করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।