মোদি-মমতা মুখোমুখি!
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ ভারতের গত লোকসভা নির্বাচন থেকে মূলত তিক্ততার শুরু। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপ্যাধায়কে উদ্দেশ্য করে একপক্ষ বলেন, বদল আনতে গিয়ে নিজেই বদলে গেলেন! আবার নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে অন্য দিক থেকে শোনা যায়, দাঙ্গাবাবুকে কোমরে দড়ি বেঁধে জেলে দেওয়া উচিত। এভাবেই শুরু মোদি ভার্সেস মমতার ম্যাচ। কিন্তু ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেলা পাশা রীতিমতো উলটে দিয়ে, একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লির মসনদে বসলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এ প্রেক্ষাপটে মোদি-মমতা সাক্ষাৎ! সে দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় আছে দেশবাসী। বিশ্বের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে সেই বৈঠক। নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি সম্মেলনে মমতা বন্ধ্যোপ্যাধায় যোগদান করেন। আবার মাঝে মধ্যে অমিত মিত্রকেও পাঠিয়ে দেন। তবে একবার অবশ্য পি চিদাম্বরম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন, অমিত মিত্রকে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ পাঠ করতে দেওয়া হয়নি। কারণ সম্মেলনটি ছিল শুধু মুখ্যমন্ত্রীদের। কিন্তু এইবার! বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের হাল এখন বেহাল। ভারত তথা প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেরও খবরের শিরোনামে এখন ‘পশ্চিমবঙ্গ’। আচমকাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি এবং বৈদেশিকই গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং(র)-এর কাছে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। তথ্য এসেছে জেএমবির প্রধান অপারেশন কেন্দ্র বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ। আর ঠিক এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতেই প্রত্যেক জেলার হাল হকিকত জানতে আগামী মাসে মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে সম্মেলন ডাকছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, পুলিশি নিরাপত্তা বিষয়কে ঘিরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্মেলনে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীদের জন্য একটি এজেন্ডা পেপার তৈরি হচ্ছে। এটি প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে, যাতে তারা রাজ্যের সমস্যা এবং ইস্যু গুলি উপস্থাপন করতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে পারে। খবরের শিরোনামে থাকা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কি ভাবছেন? শুধু বিস্ফোরণ নয়, মাওবাদীদের আঁতুড় ঘর জঙ্গল মহল কি আদৌ শান্ত!- এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর জানতে আগ্রহী কেন্দ্র। আর এখানেই থেকে গেল প্রশ্ন চিহ্ন। আগামী মাসে ডাকা সম্মেলনের প্রধান অতিথি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু সেখানে কি মমতা বন্ধ্যোপ্যাধায় উপস্থিত থাকবেন! নাকি তার পক্ষে কোনো নেতা? সারদা দুর্নীতি ও বর্ধমানে বিস্ফোরণের পর মমতা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে তিক্ততা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তারপর মমতা নিজে গিয়ে ওই বৈঠকে উপস্থিত হবেন কি না- তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ আছে। যদি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেন তাহলে এই প্রথম কোনো সরকারি অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হবেন মোদি-মমতা।