মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোবারকের ফাঁসির আদেশ
রায়ের জন্য মোবারককে রবিবারই গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।সোমবার সকাল ৯টার ২০ এ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে নিয়ে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান ট্রাইব্যুনালের দিকে রওনা হয় বলে চকবাজার থানার ওসি আজিজুল হক জানানচেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় পড়া শুরু করেন।মোবারকের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, অপহরণ ও লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল মোবারকের বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত ২ জুন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন- বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মোবারকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে দাবি করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি চায় প্রসিকিউশন।আসামিপক্ষের দাবি, মোবারকের মামলা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ মামলায় তিনি খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।মোবারকের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার টানমান্দাইল ও জাঙ্গাইল গ্রামে ৩৩ জনকে হত্যা, আনন্দময়ী কালীবাড়ী রাজাকার ক্যাম্পে আশুরঞ্জন দেবকে নির্যাতন, ছাতিয়ান গ্রামের আব্দুল খালেককে হত্যা, শ্যামপুর গ্রামের দুজনকে অপহরণ করে একজনকে হত্যা এবং খরমপুর গ্রামের একজনকে আটক রেখে নির্যাতন।এসব অপরাধ ১৯৭১ সালের অগাস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে সংঘটিত হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।২০১৩ সালের ২০ মে মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রসিকিউশনের মোট ১২ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।এরা হলেন- মামলার মুক্তিযোদ্ধা দারুল ইসলাম,শহীদ আব্দুল খালেকের মেয়ে খোদেজা বেগম ও ছেলে রফিকুল ইসলাম,মো.খাদেম হোসেন খান,আলী আকবর, মো.আব্দুল মালেক,মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল মল্লিক,আব্দুস সামাদ,শহীদজায়া ভানু বিবি,আব্দুল হামিদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট চমন সিকান্দার জুলকারনাইন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামল চৌধুরী।গত ২৫ নভেম্বর প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং তাদের আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়।আর আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন আসামি মোবারক হোসেন নিজে ও তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আসাদ উদ্দিন। উভয় সাক্ষীকেই সাক্ষ্য দেয়া শেষ হলে জেরা করে প্রসিকিউশন।প্রসিকিউশনের বক্তব্য অনুযায়ী, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ার নয়াদিল গ্রামের মোবারক একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের তৈরি রাজাকারের তালিকায়ও তার নাম রয়েছে।