১৫০ কোটি বছর পুরোনো পানি!
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ কানাডার খনিতে বিশ্বের প্রাচীনতম পানি ভাণ্ডারের সন্ধান মিলল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই পানির বয়স ১৫০ কোটি বছর।
গবেষকদের মতে, আদিম পানির ধারা পরীক্ষা করে সন্ধান পাওয়া যেতে পারে পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহের অজানা নানা তথ্য।
কানাডার অন্ট্যারিও অঞ্চলের টিমিন্স খনির ভেতরে ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২.৪১৪০ কিলোমিটার গভীরে স্ফটিকে পরিণত হওয়া পাথরের ভেতরে এই প্রাগৈতিহাসিক পানির সন্ধান পাওয়া যায়। ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ল্যাঙ্কাস্টার পরিবেশ কেন্দ্রের প্রধান গ্রেগ হল্যান্ড এবং ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় ও কানাডার দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দল সম্প্রতি মাটির গভীরে পানির কয়েকটি পৃথক উৎস আবিষ্কার করেছেন, যা এযাবত বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।
পানির বয়স কীভাবে জানা গেল প্রশ্ন উঠতে পারে, গবেষক দল জানিয়েছে, এক ধরনের ডেটিং প্রক্রিয়ার সাহায্যে পানির ভেতরের ঘুমন্ত জেনন গ্যাসের নমুনা পরীক্ষা করেই বয়স জানা যায়। এই প্রক্রিয়ায় জেনন আইসোটোপ ব্যবহার করে বোঝা যায়, কোনো তরল শেষ কবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসেছিল।
পরীক্ষায় জানা গেছে, গুহার মাটি খুঁড়ে পাওয়া এ পানি অন্তত ১৫০কোটি বছরের প্রাচীন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে দুনিয়ার প্রাচীনতম পানির হদিস মিলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার এক সোনার খনির ভেতরে। আবিষ্কার করেছিলেন একই দলের বিজ্ঞানীরা।
তাদের দাবি, সেই পানির চেয়ে কয়েক শ লক্ষ বছরের বেশি পুরোনো কানাডার এই পানি। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া পানির মধ্যে মিলেছিল আনুবীক্ষণিক প্রাণির অস্তিত্ব।
গবেষকদের মতে, সূর্যের আলোর অনুপস্থিতিতে জলে দ্রবীভূত হাইড্রোজেন ও মিথেনের সাহায্যে শক্তি সঞ্চয় করে বেঁচে গিয়েছিল ওই জীবগুলো। এবার কানাডার খনিতে পাওয়া পানি পরীক্ষা করেও সেই ধরনের প্রাণির অস্তিত্বের সন্ধান করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অধ্যাপক গ্রেগ হল্যান্ডের কথায়, ‘আপাতত কানাডার সহকর্মীরা পানির মধ্যে প্রাণের উৎস খুঁজতে ব্যস্ত। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে চরম আবহাওয়ার মাঝেও কোটি কোটি বছর ধরে যে কোনও গ্রহে আনুবীক্ষণিক প্রাণ বেঁচে থাকতে সমর্থ। এই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে মঙ্গলগ্রহের মাটির নিচে জীবনের খোঁজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ল।’
তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়া টাইমস।