ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার হবে না
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বাংলাদেশ কেনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেবে না। কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিশেষ করে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের ভূমিও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। রবিরার রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত নিরাপত্তা সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দিল্লিভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (বিইআই) এ সংলাপের আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিইআইয়ের সভাপতি ফারুক সোবহান এবং ওআরএফের হেড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ এন্ড ফেলো সি রাজা মোহন বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদ আলী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অন্যতম সহযোগিতার ক্ষেত্র হলো নিরাপত্তা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নিরাপত্তার ইস্যুটি। তিনি বলেন, আমরা মানব নিরাপত্তার উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সর্বক্ষেত্রে মানবজীবনে আন্তঃনির্ভরশীলতা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তা ইস্যুটি বিশ্বায়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে পড়েছে
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। এই সন্ত্রাসবাদের হুমকি ইস্যুতে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিলো। তিনি বলেন, দুই দেশের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার ও ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের সম্পর্কে চমৎকার অগ্রগতি হয়েছে। দুই দেশের নেতারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতার গুরুত্ব আবারো সামনে এসেছে। এ বিষয়ে ভারতকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সংযোগের (কানেকটিভিটি) বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তার চমৎকার ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
মাহমুদ আলী আরো বলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে দুই দেশের আগ্রহ সামগ্রিক সম্পর্কের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ইতিমধ্যে ভারতের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের এই সহায়ক পরিবেশের সুযোগ নেবে বলে আমরা আশা করি।
সি রাজা মোহন বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজ করছে। এই সম্পর্কের একটি বড় ক্ষেত্র হলো নিরাপত্তা ইস্যু। সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে আমাদের নিরাপত্তা ইস্যুতে আরো কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সম্পর্কের অগ্রগতির জন্য সরকারের পাশাপাশি থিংক ট্যাংক, সুশীল সমাজকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
দুইদিনের এই সংলাপের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল্যায়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরা। একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করা।