বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, September 8, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » বিবিধ » ৮ ব্যাংককে জরিমানা

৮ ব্যাংককে জরিমানা 

অর্থনৈতিক প্রতিবেদকঃ   গ্রাহকদের হালনাগাদ তথ্য না থাকায় ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) সময়মতো না জানানোয় ইসলামী ব্যাংকসহ আট ব্যাংককে জরিমানা করা হয়েছে। বিএফআইইউর উপ প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান জানান, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে দুই থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে।
এ আইন ভাঙলে ৫০ হাজার থেকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মাহফুজুর রহমান বলেন, “গ্রাহকের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি হালনাগাদ রাখার দায়িত্ব ব্যাংকেরই। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নির্দেশনা। তাছাড়া বিএফআইইউর নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় সম্প্রতি এসব ব্যাংককে জরিমানা করা হয়েছে।

” bank
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডকে।
ব্র্যাক ব্যাংককে পাঁচ লাখ টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংককে চার লাখ টাকা, ডাচ-বাংলা, সাউথ ইস্ট ও উত্তরা ব্যাংককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা গুণতে হচ্ছে।
এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে করা হয়েছে এক লাখ টাকা জরিমানা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মাহফুজুর রহমান জানান, ২০০২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে ওই সময়ের আগে খোলা ব্যাংক হিসাবগুলোর কেওয়াইসি ফরম (নো ইওর কাস্টমার) হালনাগাদ করতে বলে এবং এজন্য ২০১০ সাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।
কিন্তু আট বছরেও তা না হওয়ায় ২০১০ সালে  বাংলাদেশ ব্যাংক আরও দুই বছর সময় দেয়।
“তারপরও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা কেওয়াইসি ছাড়া অনেক হিসাবের তথ্য পেয়েছেন। কোনো কোনো অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্যও পাওয়া গেছে। অথচ এসব লেনদেনের তথ্য বিএফআইইউকে জানায়নি ব্যাংকগুলো। এসব কারণেই জরিমানা করতে হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে নড়েচড়ে বসেছে ব্যাংকগুলো। এক যুগ ধরে গ্রাহকের তথ্য হালনাগাদ না করে এখন ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোশিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের কাছে তথ্য চাওয়া হচ্ছে।
অ্যাকাউন্টে গ্রাহক তথ্য হালনাগাদ করার জন্য সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় এই বিজ্ঞাপন দেয় এবিবি।  এতে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে গ্রাহকদের ও অ্যাকাউন্ট নমিনিদের সদ্য তোলা এক কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি এবং যে কোনো একটি ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন) গ্রাহকদের জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গ্রাহক সময়মতো এসব তথ্য না দিলে অ্যাকাউন্টের লেনদেন, ডেবিট কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবিবির সভাপতি ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, “গ্রাহক তথ্য হালনাগাদ রাখা একটি রেগুলেটরি রিকয়ারমেন্ট। এটা সব ব্যাংকের জন্য। সে কারণেই আমরা আলাদাভাবে না বলে এবিবির পক্ষ থেকে সব ব্যাংকের গ্রাহকদের এ অনুরোধ জানিয়েছি।”
গত বছর প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য গোপন করায় ২০১১-১২ অর্থবছরে একটি ব্যাংককে জরিমানা করা হয়। এছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ আইনবিষয়ক বিধি-বিধান যথাযথভাবে মেনে না চলায় জরিমানা করা হয় ২২টি ব্যাংককে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগ রয়েছে। এর আগে এই ব্যাংকে এমন কিছু অ্যাকাউন্ট হোল্ডার পাওয়া যায়, যাদের নাম জাতিসংঘের সন্দেহের তালিকাতেও রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ‘লুকিয়েছিল’ ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটির এক প্রতিবেদনেও। ২০১০ সাল থেকেই এ ব্যাংকের জন্য একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone