মুসা বিন শসমেরকে দুদকে তলব
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আলোচিত সমালোচিত রহস্যপুরুষ মুসা বিন শসমেরকে তলব করেছে দুদক। আগামী ১৮ ডিসেম্বর তাকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগে আলোচিত এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে এ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে মুসা বিন শমসেরকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বলে দাবি করা হয়েছে। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২ বিলিয়ন ইউএস ডলারেরও বেশি। তিনি অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত।
দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন জানান, এ ব্যবসায়ীর আয়, আয়ের উত্স, জীবনযাপনের যে বিবরণ প্রকাশ হয়েছে, তা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তাই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে
।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৪ জুন ড. মুসা বিন শমসেরের ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে নো ইওর কাস্টমার (কেওয়াইসি) ফর্মে তার সব তথ্য জানতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ড. মুসার সব ব্যাংকের স্থায়ী, চলতি, সঞ্চয়ী, ডিপিএস, এফডিআর বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে হিসাব পরিচালিত হয়েছে বা হচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে তথ্যসহ হিসাব খোলার দিন থেকে হালনাগাদ হিসাব বিবরণী দাখিল করতে তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদকের চাহিদার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব হিসাব তলব করলেও পরে আর এ বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি।
তার নিজস্ব ও প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, মুসা বিন শমসের বিশ্বব্যাপী পরিচিত, ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের একজন। সবচেয়ে কম বয়সী বিজনেস টাইকুন হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত বলেও উল্লেখ রয়েছে সাইটে। মুসা আন্তর্জাতিকভাবে বিদ্যুত্, আবাসন, পরিশোধনাগার, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। সাইটে আরো উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পিএইচডি অর্জন করেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে তিনি লেবার পার্টির টনি ব্লেয়ারকে ৫০ লাখ পাউন্ড নির্বাচনী প্রচারণার ব্যয় প্রদানের প্রস্তাব করেন। তবে বিদেশী নাগরিক হওয়ায় টনি ব্লেয়ার সে অনুদান গ্রহণ করেননি। আর ২০০৯ সালে সুইস কর্তৃপক্ষ নিয়মবহির্ভূত লেনদেনের জন্য তার ৭০০ কোটি ডলারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। অনিয়মিত লেনদেনের অভিযোগে এ ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলেও আইনি লড়াইয়ে সে অর্থ ফেরত পান তিনি।
উল্লেখ্য, প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের বাড়ি ফরিদপুরে। তিনি দেশে প্রথম আদম ব্যবসা শুরু করেন। ডিফেন্স অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি (ড্যাটকো) গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ১৯৭৪ সালে এ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।