আন্দোলনে নতুন বাঁক

- আপডেট সময় : ১১:০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ ৫ বার পঠিত

গত বছর ১৩ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে চলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার কঠোর হতে থাকে। এর ফলে কোটা আন্দোলন নতুন বাঁক নিতে শুরু করে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলগুলোও ভেতরে ভেতরে সক্রিয় হতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের দাবি ন্যায্য হলেও সরকার ভিন্ন খাতে নিতে অপকৌশল করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, বিএনপির এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো। এরা ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কিছুই থাকবে না।
১৩ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গণপদযাত্রায় অংশ নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলা তুলে নিতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা। এদিন সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই আলটিমেটাম দেন। পুলিশকে মামলা তুলে নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, শাহবাগ থানায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ বলছে, শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষতি করেছে। ক্ষতি যদি হয়, তাহলে অজ্ঞাতনামা মামলা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, আমাদের নামেই মামলা দিতে পারেন।
এই সংবাদ সম্মেলন থেকে ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণাও দেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি জেলা শহরগুলোতে শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
১৩ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দিনব্যাপী গণসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল ও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এ গণসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া এই দিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে চলমান আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৩৮ সদস্যের এ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের ২৪ জন শিক্ষার্থীকে সমন্বয়ক এবং ১৪ জনকে সহসমন্বয়ক হিসেবে রাখা হয়। এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজবাড়ী রেলস্টেশনের সামনে ১৩ জুলাই রেললাইনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস আটকে দেন তারা।
এই দিন আন্দোলনকারীদের দাবি ও বক্তব্যকে সংবিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। রাস্তা বন্ধ না করে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এদিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ বলেন, আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করলে কিংবা সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌক্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কোটা সংস্কারের বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় নির্বাহী বিভাগ এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দিলে তা অসাংবিধানিক হবে বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।