সদরঘাটে স্বাধীনতার আগে কিছু হোটেল ছিলো, চিত-কাত হোটেল। বিশাল তোষক আড়া-আড়ি করে সাজানো থাকতো, মানুষ এক জনের পাশে আরেকজন শুয়ে পড়ত, একটা থাকতো চিত হয়ে শোয়ার তোষক, আরেকটা থাকতো কাত হয়ে শোয়ার তোষক, যারা চিত হয়ে শুত তারা দিত আট-আনা আর যারা কাত হয়ে শুত তারা দিতো এক টাকা। গুরুজনদের কাছে এরকমই শুনেছি।
কিছু রেস্টুরেন্ট ছিলো, যেগুলো তে পেট চুক্তি আট-আনা তে খাওয়া যেতো। মেনু থাকতো, ইলিশ মাছের কিংবা বোয়াল মাছের বিশাল একটা পিস, আর যত খুশি ভাত ডাল। সে সকল রেস্টুরেন্টের মালিকরা বসে থাকতো পথচারীদের ডেকে নিয়ে যেয়ে খাওয়াতেন, পথচারীরা বলতেন, সময় নাই, তারা বলতেন, ডাক আসলে চলে যাবেন, তখন সব মাফ। পথচারীদের ভিতর যারা কলেজ পড়ুয়া বাঁদর ছিলেন, হুইসেল পরা পর্যন্ত খাওয়া শেষ করতেন না, যেই না হুইসেল পড়ত, ভাতের প্লেট সাথে নিয়ে দৌড়... পিছনে পিছনে ছুট লাগাত হোটেলের ছোট্ট পিচ্চি, টাকা আনার জন্য। সাধারনত হোটেল ব্যবসায়ীদের এদের পিছনে ছুটার জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত কিছু উসাইন বোল্ট থাকত। যারা অলিম্পিকে নিশ্চিত গোল্ড মেডেলের মায়া এই হোটেলে চাকুরী করবার সুবাদে ত্যাগ করে এসেছেন।
ঢাকার নবাব পরিবারের সাথে আমার যাতায়াত আছে, এই পরিবারের অনেক সদস্য এখন খুব কষ্টে ছাঁদ ভাগাভাগী করে থাকে, প্রাইভেট টিউটরের বেতন দিতে কষ্ট হয়। মোঘল বাদশাহদের নাতিদের যদি রুটি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়, তাহলে ঢাকার নবাব... বুঝে নেন।
তবে নবাব পরিবারের রান্না খাওয়া আমার সৌভাগ্য হয়েছে, বাংলাদেশের ভিতরে অন্যতম শ্রেষ্ঠ রান্না তারা করে থাকেন। আহা... পুরাতন ঢাকায় এক সময় ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দেয়া হত, তারা অনেক দিল খোলা মানুষ, তাই ব্যাচেলরদের খুব আদর করতেন, স্নেহ করতেন, ঘরে ডেকে খাওয়াতেন, ভাড়া না দিতে পারলে ক্যাচ ক্যাচ করতেন না, ব্যাচেলরটি বাড়িতে থাকতো চাচাজি চাচাজি করত, এক সময় বোনজির সাথে প্রেম করত, পুরাতন ঢাকার মেয়েরা আবার যার সাথে প্রেম হয়, তাকেই বিয়ে করে, এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলো, অতঃপর... সব বাড়িওয়ালারা সজাগ হয়ে এক সময় সিদ্ধান্ত নিলেন আর ব্যাচেলরপ্রীতি নয় । কোন ঘরজামাই নয়।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
প্রকাশক ও সম্পাদক: কবির হোসেন
অফিসঃ ১৮০-১৮১ (৮ম তলা), শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বরণী, বিজয়নগর, ঢাকা – ১০০০
ফোনঃ ০২-২২২২২৮৭৮০, ফ্যাক্সঃ ০২-২২২২২৮৫১৫, মোবাইলঃ ০১৭৪৬-৬৪১২৮১, ০১৮৩৩-৯৩৮৫৭৯
Email : aideshaisomoy1977@gmail.com
২০০৫-২০২৫ © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | একটি গ্লোবাল পাবলিকেশন এন্ড মিডিয়া লিমিটেড প্রতিষ্ঠান