ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) খুন হয়েছেন বলে ঢাকা ও কলকাতার পুলিশ নিশ্চিত করলেও গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁর লাশ উদ্ধার হয়নি। এই ঘটনায় নতুন করে কলকাতায় একজনকে গ্রেপ্তার এবং অন্য একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
এ ঘটনায় ভারতের কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, খুনের আগে লাশ গুমের পরিকল্পনা সাজান খুনিরা। এ জন্য তাঁরা ট্রলি ব্যাগ, চাপাতি, ব্লিচিং পাউডার, পলিথিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে রাখেন। ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরে সরানো হয়েছে। এর কিছু অংশ কলকাতার একটি খালে ফেলা হয়েছে। কলকাতার পুলিশ খুনিদের ভাড়া ফ্ল্যাটের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়া গেছে।
কলকাতার একটি সূত্র বলছে, নিউ টাউনের যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করা হয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েক ব্যক্তি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বেরোচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে ঢাকায় ধরা পড়েছেন। কলকাতা পুলিশ মনে করছে, ওই ট্রলির ব্যাগের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির খণ্ডিত দেহ সরানো হয়েছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, লাশ গুম করার ক্ষেত্রে কলকাতায় অন্য একটি দল সহায়তা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ জন্য খুনের পর পুলিশ ও স্বজনদের বিভ্রান্ত করার জন্য আনোয়ারুলের ফোন থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে নিকটজনদের খুদে বার্তা পাঠানো হয়। এই কাজে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
এদিকে গতকাল ঢাকায় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার পর লাশ খণ্ড খণ্ড করে গুম করা হয়। তাঁর পুরো লাশ না পাওয়া গেলেও খণ্ডিত মরদেহ পাওয়া যাবে মনে করেন তিনি। ডিবিপ্রধান বলেন, খুনিরা অনেক দিন ধরে এই সংসদ সদস্যকে হত্যার সুযোগ খুঁজছিলেন। এক-দুই মাস ধরে ঢাকার গুলশান ও বসুন্ধরার দুটি বাসায় এ নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হয়। ঢাকায় ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকায় হত্যার স্থান হিসেবে কলকাতাকে বেছে নেওয়া হয়।
আনোয়ারুল হত্যায় জড়িত সন্দেহে কলকাতা পুলিশের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে সেখান থেকে দেশে ফেরা তিনজনকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাঁদের গতকাল ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। আনোয়ারুল আজীমকে অপহরণ করার অভিযোগ এনে বুধবার মামলাটি করেন তাঁর মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন আমানুল্লাহ (প্রকৃত নাম শিমুল ভূঁইয়া), শিলাস্তি রহমান ও তানভীর ভূঁইয়া। এই তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, খুনের ঘটনায় জিহাদ ও সিয়াম নামের আরও দুজনের নাম এসেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: কবির হোসেন
অফিসঃ ১৮০-১৮১ (৮ম তলা), শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বরণী, বিজয়নগর, ঢাকা – ১০০০
ফোনঃ ০২-২২২২২৮৭৮০, ফ্যাক্সঃ ০২-২২২২২৮৫১৫, মোবাইলঃ ০১৭৪৬-৬৪১২৮১, ০১৮৩৩-৯৩৮৫৭৯
Email : aideshaisomoy1977@gmail.com
২০০৫-২০২৫ © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | একটি গ্লোবাল পাবলিকেশন এন্ড মিডিয়া লিমিটেড প্রতিষ্ঠান