ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিকে জুলাই যোদ্ধাদের জাতীয় বীরের তকমা, কেন এই অধঃপতন?

এই দেশ এই সময় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০১:১০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫ ১৯ বার পঠিত

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভালোবাসার বিপরীত পিঠও দেখে ফেলেছেন জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই। জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন তাদের এই অধঃপতন? বিশ্লেষকরা বলছেন ক্ষমতা আর অর্থের লোভ সামলাতে পারছেন না কেউ কেউ।

যাদের হাত ধরে এসেছে নতুন বাংলাদেশ সেইসব শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। যাদের আস্থায় ভর করে এতদূর এগুলো বাংলাদেশ , অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের মধ্যেই কেন সেই আস্থায় ছেদ?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, নির্লোভ থাকার পরীক্ষায় ফেল করেছে কিছু জুলাই যোদ্ধা। বয়সের চাওয়া পাওয়ার হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ক্ষমতা ও অর্থ পাওয়ার আগে মানুষকে জ্ঞানী হতে হয়। সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা না করেই রাজনীতির চোরাবালিতে হারিয়ে গিয়েছেন অনেকেই।

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের মতে, অভিজ্ঞতার পর ক্ষমতা পেতে হয়। এখনই ক্ষমতায় যেতে হবে এই লোভ মানুষকে ধ্বংস করে। রাজনীতির মাঠে ওরা এখন প্রতিদ্বন্দ্বী, এটিও একটি মুখ্য কারণ হতে পারে।

সার্বিক এই পরিস্থিতি অবশ্য অস্বীকার করছেন না জুলাই যোদ্ধারাও। বলছেন, তাদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার সবটুকু রাখতে পারেননি তারা। যারা চাঁদাবাজি করছে তাদের রয়েছে ভিন্ন উদ্দেশ্য। আত্মপক্ষ সমালোচনার পাশাপাশি রয়েছে অভিযোগও।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, এই প্রেক্ষাপটে সরকারেরও অনেক কিছু করার কথা ছিল। অভিভাকসুলভ আচরণ পাওয়া যায়নি অনেক ক্ষেত্রেই। তবে সত্য অভিযোগের সাথে অনেক প্রপাগান্ডাও আছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ মনে করেন, যারা বিপ্লব করেছে তাদের সংগঠিত করা যায়নি। এই ব্যর্থতা রাষ্ট্রের। স্বীকার করলেন, কেউ কেউ জড়িয়েছেন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সাথেও।

উল্লেখ্য, এনসিপি গঠনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচিত হওয়ায় জাতীয় বীরের তকমা ফিকে হচ্ছে জুলাই যোদ্ধাদের। তবে জুলাই হিরোদের দাবি সরকারের অভিভাবকসুলভ আচরণে শূন্যতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর একরোখা ভাব বিতর্কিত করছে তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফিকে জুলাই যোদ্ধাদের জাতীয় বীরের তকমা, কেন এই অধঃপতন?

আপডেট সময় : ০১:১০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভালোবাসার বিপরীত পিঠও দেখে ফেলেছেন জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই। জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন তাদের এই অধঃপতন? বিশ্লেষকরা বলছেন ক্ষমতা আর অর্থের লোভ সামলাতে পারছেন না কেউ কেউ।

যাদের হাত ধরে এসেছে নতুন বাংলাদেশ সেইসব শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। যাদের আস্থায় ভর করে এতদূর এগুলো বাংলাদেশ , অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের মধ্যেই কেন সেই আস্থায় ছেদ?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, নির্লোভ থাকার পরীক্ষায় ফেল করেছে কিছু জুলাই যোদ্ধা। বয়সের চাওয়া পাওয়ার হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ক্ষমতা ও অর্থ পাওয়ার আগে মানুষকে জ্ঞানী হতে হয়। সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা না করেই রাজনীতির চোরাবালিতে হারিয়ে গিয়েছেন অনেকেই।

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের মতে, অভিজ্ঞতার পর ক্ষমতা পেতে হয়। এখনই ক্ষমতায় যেতে হবে এই লোভ মানুষকে ধ্বংস করে। রাজনীতির মাঠে ওরা এখন প্রতিদ্বন্দ্বী, এটিও একটি মুখ্য কারণ হতে পারে।

সার্বিক এই পরিস্থিতি অবশ্য অস্বীকার করছেন না জুলাই যোদ্ধারাও। বলছেন, তাদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার সবটুকু রাখতে পারেননি তারা। যারা চাঁদাবাজি করছে তাদের রয়েছে ভিন্ন উদ্দেশ্য। আত্মপক্ষ সমালোচনার পাশাপাশি রয়েছে অভিযোগও।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, এই প্রেক্ষাপটে সরকারেরও অনেক কিছু করার কথা ছিল। অভিভাকসুলভ আচরণ পাওয়া যায়নি অনেক ক্ষেত্রেই। তবে সত্য অভিযোগের সাথে অনেক প্রপাগান্ডাও আছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ মনে করেন, যারা বিপ্লব করেছে তাদের সংগঠিত করা যায়নি। এই ব্যর্থতা রাষ্ট্রের। স্বীকার করলেন, কেউ কেউ জড়িয়েছেন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সাথেও।

উল্লেখ্য, এনসিপি গঠনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচিত হওয়ায় জাতীয় বীরের তকমা ফিকে হচ্ছে জুলাই যোদ্ধাদের। তবে জুলাই হিরোদের দাবি সরকারের অভিভাবকসুলভ আচরণে শূন্যতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর একরোখা ভাব বিতর্কিত করছে তাদের।