ঢাকা ০৯:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু

এই দেশ এই সময় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ৫ বার পঠিত

৩৫ বছর পর আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন; ৪০টি পদে ৯০৭ প্রার্থী, ভোটার ২৭ হাজারের বেশি, ক্যাম্পাসজুড়ে কড়া নিরাপত্তা।

দীর্ঘ ৩৫ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। সবশেষ ১৯৯০ সালে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার ও পদসংখ্যা বিবেচনায় একজন শিক্ষার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি পদে ভোট দিতে হবে প্রত্যেক ভোটারকে। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একটি করে ভোট প্রদানের হিসাব করা হয়েছে।

ভোটগ্রহণ শেষে হবে গণনা। কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ থেকে এবং হল সংসদের ফলাফল নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নির্বাচনে ১৩টি প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল থাকলেও আলোচনায় রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি প্যানেল। প্রধান তিনটি পদের প্রতিটিতে বিশের অধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এ ছাড়া বাকি সম্পাদকীয় পদগুলোতেও প্রতিটিতে দশের অধিক প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী আছেন ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদে নির্বাচন করছেন ৪৯২ জন। নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ছাত্র ও ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ২২ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়া সম্পাদকীয় পদগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১২ জন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১৪ জন, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহ-ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১০ জন, দফতর সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহদফতর সম্পাদক পদে ১৪ জন, আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহযোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহসাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৫ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৫ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৬ জন, যোগাযোগ, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন ও নির্বাহী সদস্যের পাঁচটি পদে ৮৫ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এদিকে চাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দানের সুবিধার্থে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য শাটল ট্রেনের বাড়তি সিডিউল ও দুই স্পট থেকে বাসের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। চলছে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের টহল। নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাজারখানেক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। র‍্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দলও ক্যাম্পাসে টহল দিচ্ছে।

ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন সদস্য মোতায়েন থাকার কথা রয়েছে।

গত ২৮ আগস্ট চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর যাচাই-বাছাই শেষে ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

ওই মাসের ১৪ তারিখ থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়ে চলে ১৭ সেপ্টেম্বর। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।

নির্বাচনের জন্য ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করা হলেও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেটি পিছিয়ে ১৫ অক্টোবর করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

চাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু

আপডেট সময় : ০১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

৩৫ বছর পর আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন; ৪০টি পদে ৯০৭ প্রার্থী, ভোটার ২৭ হাজারের বেশি, ক্যাম্পাসজুড়ে কড়া নিরাপত্তা।

দীর্ঘ ৩৫ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। সবশেষ ১৯৯০ সালে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার ও পদসংখ্যা বিবেচনায় একজন শিক্ষার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি পদে ভোট দিতে হবে প্রত্যেক ভোটারকে। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একটি করে ভোট প্রদানের হিসাব করা হয়েছে।

ভোটগ্রহণ শেষে হবে গণনা। কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ থেকে এবং হল সংসদের ফলাফল নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নির্বাচনে ১৩টি প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল থাকলেও আলোচনায় রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি প্যানেল। প্রধান তিনটি পদের প্রতিটিতে বিশের অধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এ ছাড়া বাকি সম্পাদকীয় পদগুলোতেও প্রতিটিতে দশের অধিক প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী আছেন ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদে নির্বাচন করছেন ৪৯২ জন। নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ছাত্র ও ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ২২ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়া সম্পাদকীয় পদগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১২ জন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১৪ জন, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহ-ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১০ জন, দফতর সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহদফতর সম্পাদক পদে ১৪ জন, আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহযোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহসাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৫ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৫ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৬ জন, যোগাযোগ, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন ও নির্বাহী সদস্যের পাঁচটি পদে ৮৫ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এদিকে চাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দানের সুবিধার্থে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য শাটল ট্রেনের বাড়তি সিডিউল ও দুই স্পট থেকে বাসের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। চলছে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের টহল। নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাজারখানেক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। র‍্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দলও ক্যাম্পাসে টহল দিচ্ছে।

ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন সদস্য মোতায়েন থাকার কথা রয়েছে।

গত ২৮ আগস্ট চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর যাচাই-বাছাই শেষে ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

ওই মাসের ১৪ তারিখ থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়ে চলে ১৭ সেপ্টেম্বর। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।

নির্বাচনের জন্য ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করা হলেও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেটি পিছিয়ে ১৫ অক্টোবর করা হয়।